পাবনা প্রতিনিধি

  ১৩ নভেম্বর, ২০১৮

পাবনায় করাতকল বন্ধ

অসুবিধায় মালিক ও শ্রমিকরা

পাবনার ৯ উপজেলায় দেড় মাস ধরে করাতকল (স মিল) বন্ধ থাকায় মালিক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, কাঠ-মিস্ত্রিসহ কয়েক হাজার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। করাতকলে কাঠচেড়াই, বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র তৈরি এবং ঘরবাড়ি নির্মাণের সঙ্গে জড়িতদের উপার্জন বন্ধ হওয়ায় অসহায় হয়ে পড়ছেন তারা। পরিবার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে তাদের জন্য। এদিকে টাকা জমা দিয়েও লাইসেন্স (অনুমোদন) না পেয়ে হতাশায় পড়েছেন মালিকরা। পাবনা সামাজিক বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পাবনা জেলায় ৩৫০টিরও বেশি করাতকল আছে। যার অনুমোদন বা লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ২৭টি। লাইসেন্সবিহীন করাতকল মালিকরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগে গত ১ আগস্ট ‘ল’ইয়ার সোসাইটি ফর ল’ উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন। এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও সামাজিক বন বিভাগ পাবনার কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান অবৈধ করাতকল বন্ধ করে দেন। এসব করাতকল মালিক বৈধ ব্যবসার স্বার্থে বিভাগীয়

বন কর্মকর্তা সামাজিক বন বিভাগ পাবনা বরাবর অনুমোদনের আবেদন করেন ও ব্যাংকে টাকা জমা দেন। অনেক দিন হলো টাকা জমা দিয়েও অনুমোদন না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন তারা। পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বোয়াইলমারী বাজারের স-মিল মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল ভ্যাটসহ ২ হাজার ৩০০ টাকা সোনালী ব্যাংক পাবনা শাখায় বন বিভাগের অনুকূলে জমা দিয়েছেন। একই সালে যদু ফকিরও টাকা জমা দেন। ২০১৭ সালে একইভাবে জমা দেন অনিল কুমার। তারা আরো জানান, টাকা জমা দিয়ে বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বারবার ঘুরে কোনো কাজ হয়নি। আগে টাকা জমা দিয়ে কাজ না হলেও প্রশাসনিক চাপে আবারও নতুন করে গত অক্টোবর মাসে সবাই একযোগে বন বিভাগের অনুকূলে ভ্যাটসহ ২ হাজার ৩০০ টাকা জমা দিয়েছেন।

পাবনা সদরের সিংগা বাইপাসে মেসার্স মাওলা স-মিলের মালিক শহিদুল ইসলাম জানান, আমার স-মিলে ১০ শ্রমিক ও ১৫ জন মিস্ত্রি কাজ করেন। এ মিল থেকে ১০টি ফার্নিচার দোকানের চেরাই কাঠ সরবরাহ করা হয়। স-মিল বন্ধ থাকায় ফার্নিচার দোকান বন্ধ রয়েছে। সিংগা সঙ্গী ফার্নিচারের মালিক আ. রহিম জানান, আমার প্রতিষ্ঠানে ৯ জন শ্রমিক কাজ করেন, কাঠের অভাবে আসবাবপত্রের কাজ করা যচ্ছে না। কাঠ ব্যবসায়ী আবদুল সামাদ খান জানান, তার ১৫ থেকে ২০ জন মিস্ত্রি টিনের ঘর তৈরির কাঠের রুয়া, বাটাম ও শাটারিংয়ের কাজ করেন। কাঠের অভাবে আমরাও এখন অসহায়।

করাতকল মালিকরা আরো জানান, ধারদেনা করে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ করে মিল প্রতিষ্ঠা করে তা বন্ধ থাকায় মালিক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, মিস্ত্রিসহ সংশ্লিষ্টরা বেকারগ্রস্ত হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সামাজিক বন বিভাগ পাবনার কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান জানান, করাতকলের আবেদন জমা পড়েছে দুশোরও বেশি। কিন্তু উচ্চ আদালতে রিট আবেদনের জটিলতায় আটকে আছে লাইসেন্স দেওয়া।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close