reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ জানুয়ারি, ২০২২

জয়ে ফিরল মুশফিকের খুলনা টাইগার্স

বিপিএল আসরের ঢাকা পর্বের প্রথম দুই ম্যাচে ভালো না করতে পারলেও চট্টগ্রাম পর্বে রানে ফিরলেন মুশফিকুর রহিম। অপরাজিত থেকে খুলনা টাইগার্সকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে স্বাগতিকদের মাঠে মুশফিকরা জয় পেয়েছেন ৬ উইকেটে।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করে স্বাগতিক চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ব্যাটিং করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪৩ রান করে থামে মেহেদি হাসান মিরাজের দল। রান তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হাতে রেখে ৭ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় খুলনা।

দলকে জয়ে ফেরানোর ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন খুলনার অধিনায়ক। চার নম্বরে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৩০ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। যেখানে ছিল চারটি চারের সঙ্গে একটি ছয়ের মার। তবে ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে ৪৭ বলে ৫৮ রান করা ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচারের হাতে।

চট্টগ্রামের করা ১৪৩ রানের জবাবে খুলনার শুরুটা খুব একটা আশা জাগানিয়া ছিল না। করোনামুক্ত হয়ে দলে ফেরা সৌম্য সরকার আউট হয়ে যান দ্বিতীয় ওভারেই। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আন্দ্রে ফ্লেচার ও রনি তালুকদার মিলে যোগ করেন ঠিক ৫০ রান। তবে রানের গতি তেমন বাড়েনি।

ইনিংসের অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে রনি করেন ১৮ বলে ১৭ রান। অপরপ্রান্তে ফ্লেচারও তুলনামূলক বেশি ডট খেলতে থাকায় দশ ওভার শেষে খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৬৪ রান। পরের তিন ওভারে তাদের আরও চেপে ধরে চট্টগ্রাম। ফলে শেষ ৭ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ৬৬ রানে। এর মাঝেই ৪৩ বলে ফিফটি পূরণ করেন ফ্লেচার।

সেখান থেকেই পাল্টা আক্রমণের শুরু। রেজাউর রহমান রাজার করা ১৪তম ওভারে একটি করে চার-ছয়ের মারে ১৪ রান তুলে নেন মুশফিক। মেহেদি হাসান মিরাজের করা পরের ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান ফ্লেচার। তবে পরের বলে আবারও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন ৫৮ রান করা ফ্লেচার। ক্যারিবীয় ওপেনারের উইকেট হারালেও দমে যাননি মুশফিক। শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার সেকুগে প্রসন্নাকে নিয়ে মাত্র ৪ দশমিক ২ ওভারে ৪৫ রান যোগ করেন খুলনার অধিনায়ক। দলের জয়ের জন্য যখন বাকি ১ রান, তখন সাজঘরে ফেরেন ১৫ বলে ২৩ রান করা প্রসন্ন। শেষ পর্যন্ত ৩০ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক মুশফিক।

এই ইনিংসের মাধ্যমে বিপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের মুকুটটাও নিজের কাছে ফিরিয়ে আনেন মুশফিক। তবে ম্যাচসেরার পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ৪৭ বলে ৫৮ রান করা ফ্লেচারকে।

এর আগে চট্টগ্রামকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করতে একদমই সময় নেননি এই ম্যাচেই প্রথম সুযোগ পাওয়া নাবিল সামাদ। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই চট্টগ্রামের ক্যারিবীয় ওপেনার কেনার লুইসকে ফিরিয়ে দেন এ বাঁহাতি স্পিনার।

ফুললেন্থের ডেলিভারি মারবো না ঠেকাবো করতে করতে সোজা কভারে দাঁড়ানো ফরহাদ রেজার হাতে তুলে দেন ১ রান করা কেনার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শুরুর ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামাল দেন আরেক ওপেনার উইল জ্যাকস ও তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব। এ দু’জনের কল্যাণে পাওয়ার প্লে'তে ৪৬ রান তুলে নেয় চট্টগ্রাম।

ইনিংসের নবম ওভারে আক্রমণে এসেই খেলার ধারার বিপরীতে জুটি ভাঙেন থিসারা পেরেরা। তার স্লোয়ার ডেলিভারে অফসাইডে খেলতে গিয়ে প্লেইড অন হন ২৩ বলে ২৮ রান করা উইল জ্যাকস। পরের ওভারেই সেকুগে প্রসন্নকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ৪ রানে সাজঘরে ফেরেন সাব্বির রহমান।

মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম। তাদের বিপদ আরও বাড়ে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজও অল্পেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরলে। শেখ মেহেদি হাসানের পরা করা ১৩তম ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে প্রসন্নার হাতে ক্যাচ দেন ১০ বল থেকে ৬ রান করা মিরাজ।

দলীয় ১০২ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর ইনিংসের বাকি দায়িত্ব নেন অভিজ্ঞ নাইম ইসলাম। তার সঙ্গে দারুণ ব্যাট করেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামও। এ দুজন মিলে নবম উইকেট জুটিতে মাত্র ১৪ বলে ২৭ রান যোগ করেন। একটি করে চার-ছয়ের মারে ৬ বলে ১২ রান করেন শরিফুল। নাইমের ব্যাট থেকে আসে দুই চার ও এক ছয়ের মারে ১৯ বলে ২৫ রান।

খুলনার পক্ষে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন থিসারা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিপিএল,জয়ে ফিরল,খুলনা টাইগার্স
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close