ঢাবি প্রতিনিধি

  ৩০ মার্চ, ২০১৮

তাদের রাজনীতিতে আসার কোনো অধিকার নেই : সংস্কৃতিমন্ত্রী

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর বলেছেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা তাদের রাজনীতিতে আসার কোনো অধিকার নেই। বিশ্বের কোনো দেশেই এমন হয়না। যে দলই এদেশের ক্ষমতায় আসুক না কেন, তারা যেনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়। এক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে দেশের সকল নাগরিককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।বৃহস্পতিবার সকালে বাংলা একাডেমীর কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের আয়োজনে ' গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ ' শীর্ষক দিনব্যাপী সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, গণহত্যা-গণকবর নিয়ে কাজ কতটা প্রয়োজনীয় তা বলে বোঝানো যাবেনা। এই কাজটি দেশের প্রতিটি স্থানে ছড়িয়ে দিতে হবে। এখানে থামলে আমাদের চলবেনা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বাদ দিয়ে আমাদের আমাদের সংস্কৃতি চর্চা হতে পারেনা । মুক্তিযুদ্ধকে সাথে নিয়েই আমাদের সংস্কৃতি চর্চা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে এদেশে আমাদের জানা-অজানা অনেক হত্যাকান্ড হয়েছে। এটা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে জানাতে হবে, সারা বিশ্বকে জানাতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে মায়ানমারের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ ও প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি দিলেও বাংলাদেশের গণহত্যার কোনো স্বীকৃতি নেই। অথচ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যা ছিলো আরো ভয়াবহ। কিন্তু কোন রাজনীতির কারণে এই গণহত্যা স্বীকৃতি পাচ্ছেনা তা আমার জানা নেই। মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে গ্রামের অনেক স্বল্পশিক্ষিত মানুষ যুদ্ধ করেছে। আমি আজও আশ্চর্য হই যে, শিক্ষিত মানুষের ন্যায় তাদের মধ্যেও অসাধারণ দেশ প্রেম ছিলো।পাকিস্তানী সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুটিকয়েক অস্ত্র নিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও তারা যুদ্ধ করেছেন। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করেছি তাদের সেনাপতি কে, কার কথায় তারা যুদ্ধ করেছেন। তখন তারা বঙ্গবন্ধুর কথা বলেছিলেন। এ থেকে বোঝা যায় যে, মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর কোনো বিকল্প ছিলোনা।

সাংবাদিক-লেখক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এই সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মুনতাসির মামুন। মুনতাসির মামুন বলেন, এই প্রথম ৪৭ বছর পর গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর নিয়ে জরিপ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০টি জেলায় এই জরিপ করা হয়েছে। পরবর্তীতে দেশের প্রতিটি জেলায় এই জরিপ চালানো হবে। গণহত্যার উপর ২শ থেকে ৩শ বই বের করতে পারলে আমার মনে হয় গণহত্যা নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবেনা।

সভাপতির বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির বলেন, এ ধরণের গবেষণার ফল পুস্তক আকারে বের করে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারী উদ্যোগে পৌছাতে হবে। তাহলেই এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠবে।

তিনি বলেন, এই গণহত্যার প্রচুর প্রমাণ পাকিস্তানে রয়েছে। সেগুলো সংগ্রহে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, যারা এদেশে গণহত্যা নিয়ে কটুক্তি করে ইতিহাস বিকৃত করে তাদের জন্যে শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করা হোক।

দিনব্যাপী এই সেমিনারে দুইটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১ টা থেকে শুরু হয়ে ১২.৪৫ মিনিট পর্যন্ত প্রথম অধিবেশনে অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং শিল্পী হাসেম খান।

অধ্যাপক মুনতাসির মামুনের সভাপতিত্বে দ্বিতীয় অধিবেশনে অতিথি ছিলেন লে.কর্ণেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক এবং কবি আসাদ মান্নান। দুপুর ২.১৫ থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দ্বিতীয় অধিবেশন চলে।

গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে দেশের ১০টি জেলার গণহত্যা ও বধ্যভূমির উপর জরিপ চালানো হয়। যেসকল জেলার উপর জরিপ চালানো হয়েছে সেই জেলাগুলো হল- বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নাটোর, ভোলা, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, খুলনা, পাবনা ও নীলফামারী জেলা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জরিপের উপর ভিত্তি করে রচিত ১০টি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

পিডিএসও/রানা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
স্বাধীনতা,রাজনীতি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist