সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ৩২ দিন পর মুক্তি পেল বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ও এর ২৩ জন নাবিক।

বাংলাদেশ সময় শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মুক্তি পান নাবিকরা। এর কিছুক্ষণ পর রাত সোয়া তিনটার দিকে জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ গণমাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করে।

আর জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রোববার দুপুর পৌনে ২টায় নিজের ফেসবুক আইডি থেকে প্রথম পোস্ট দেন জাহাজটির চিফ অফিসার আতিকউল্লাহ খান।

নিজেদের আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের কয়েকটি ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। অবিশ্বাস্য প্রচেষ্টার জন্য এসআর শিপিংকে ধন্যবাদ। বন্ধু, পরিবার ও সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা যারা পুরো যাত্রায় আমাদের জন্য প্রার্থনা করেছেন।’

আতিকউল্লাহ খান আরও লেখেন, ‘ধন্যবাদ ইইউএনএভিএফওআর অপারেশন আটলান্টা। ধন্যবাদ বাংলাদেশ। লাভ ইউ অ্যান্ড মিসিং ইউ বাংলাদেশ।’

আতিকউল্লাহ খানের শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, বাংলাদেশি নাবিকদের সঙ্গেই রয়েছেন ইইউ নেভির কমান্ডোরা। এছাড়া এমভি আবদুল্লাহর পাশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ইইউএনএভিএফওআর অপারেশন আটলান্টার একটি যুদ্ধ জাহাজও দেখা যায়।

এদিকে মুক্তির পর ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজটি সোমালিয়া থেকে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষ। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

জাহাজ ও নাবিকদের মুক্তির পর নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা ফয়সালা করা নজিরবিহীন। নববর্ষের প্রথম দিনে আমরা আনন্দিত। শুধু তাদের আত্মীয়স্বজনই নয়, পুরো দেশবাসী খুবই আনন্দিত, আমরা আমাদের নাবিকদের মুক্ত করতে পেরেছি।

তবে নাবিকদের মুক্ত করতে মুক্তিপণ দেওয়ার কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছিল জাহাজটি। জিম্মি ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি।

অস্ত্রের মুখে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। সেখানে পৌঁছানোর পর বারবার জাহাজের অবস্থান পরিবর্তন করা হয়। ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় জলদস্যুদের সাথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যোগাযোগ হয় জাহাজের মালিকপক্ষের।

পিডিএস/এমএইউ