নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ মে, ২০২২

ভোটার তালিকা হালনাগাদ হবে চার ধাপে

তথ্য সংগ্রহকারীরা যাবেন বাড়ি বাড়ি

ছবি : সংগৃহীত

আগামী ২০ মে থেকে শুরু হওয়া চলতি বছরের হালনাগাদ ভোটার তালিকার কাজ চার ধাপে সম্পন্ন করবে নির্বাচন কমিশন-ইসি। প্রথম ধাপে ১৪০ টি উপজেলায় (চলবে ২০মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত) তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ সময়ে ইসির তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করবেন। পরবর্তী ধাপসমূহের দিনক্ষণ নির্ধারণ করে কমিশন থেকে মাঠ কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিবেন।

মঙ্গলবার(১০ মে) সকালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০২২, উদ্বোধনকালে ইসি থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এই প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. মোঃ আহসান হাবিব খান (অবঃ), রাশেদা সুলতানা, মোঃ আলমগীর ও মোঃ আনিছুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোঃ আবদুল বাতেনসহ নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন কমিশন জানায়, এবারের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে দুই বছরের অগ্রিম তথ্যসহ মোট তিন বছরের তথ্য নেয়া হবে। এ সময়ে যাদের জন্ম ১ জানুয়ারি ২০০৭ বা তার পূর্বে অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সব ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

এ কার্যক্রমে ০১-০১-২০০৫ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ০২ জানুয়ারি ২০২৩; ০১-০১-২০০৬ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ০২ জানয়ারি ২০২৪ তারিখে এবং ০১-০১-২০০৭ বা তার পূর্বে যাদের জন্ম তাদের ০২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে নিবন্ধিত ভোটার হিসেবে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।

এ বছর হালনাগাদে সম্ভাব্য ভোটার বাড়তে পারে সাড়ে ৭ শতাংশ বলে ধারণা করছে কমিশন। এছাড়া এর আগে বিভিন্ন কারণে যারা ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি তদেরকেও নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে মৃত ভোটরের তথ্যও সংগ্রহ করা হবে। এসময় ভোটার স্থানান্তরের আবেদনও করা যাবে।

এদিকে, ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য একজন ভোটারযোগ্য নাগরিকের বেশকিছু তথ্য লাগবে। এ সব তথ্যের মধ্যে ১৭ ডিজিটের অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পিতা ও মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, বাসার যেকোন একটি ইউটিলিটি বিলের কপি তথ্য ফরমের সঙ্গে জমা দিতে হবে।

ইসির তথ্যমতে, এবারের হালনাগাদ কার্যক্রমে প্রায় ৫৬ হাজার তথ্যসংগ্রহকারী ও ১১ হাজার ৩০০ জন সুপারভাইজার নিয়োগ করেছে ইসি। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা তথ্যসংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

হালনাগাদ কার্যক্রমর প্রত্যেক ধাপে ৩ সপ্তাহ সময় দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একাজে নিয়োজিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/শিক্ষিকারা পাঠদানের পাশাপাশি যেন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন সেজন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও তথ্য সংগ্রহের সুযোগ রাখা হয়েছে। একজন তথ্যসংগ্রহকারী গড়ে ১৮০ জন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করবেন । তথ্য সংগ্রহের পরপরই ধাপে ধাপে নিবন্ধন কেন্দ্রে ভোটারদের নিবন্ধন করা হবে। পূর্বের ন্যায় উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়, সিটি কর্পোরেশন ও পৌর এলাকায় ওয়ার্ড পর্যায়ে নিবন্ধন কেন্দ্র স্থাপন করে ভোটারদের ছবি, দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ গ্রহণ করে ভোটার নিবন্ধন করা হবে। এ সময় ভোটারদের মূল তথ্যের প্রিন্ট কপি দেয়া হবে।

রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার তালিকাভুক্ত হতে না পারে সে জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৩২ টি বিশেষ এলাকার জন্য বিশেষ কমিটির মাধ্যমে নিবন্ধন যাচাই - বাছাই করা হবে । এছাড়া রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক সম্বলিত ডাটাবেসও ব্যবহার করা হবে। এ সময় আরো জানানো হয়, দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্য- ১১কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন এর মধ্যে পুরুষ ৫কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২ জন, নারী ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার সংখ্যা ৪৫৪ জন।

২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর ২০১০ সালের ৩১ জানুয়ারি তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পুর্ণ বা বেশি হয়েছে , তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ প্রথমবারের মতো ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল। ২০১৩ সালে ১ জানুয়ারি তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে, তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ ২ বার , ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে তাদের অন্তভুক্তিসহ ৩ বার এবং ২০১৮ সালে ১ জানুয়ারি তারিখে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে , তাদের নাম অন্তর্ভুক্তিসহ ৪র্থ বার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে বিশেষ কার্যক্রম হিসেবে ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে যাদের জন্ম অথবা ভোটার তালিকায় হালনাগানের বিগত কার্যক্রমে বাদ পড়েছেন, তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ৫ম বার ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছিল।

সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৬ষ্ঠ বা মাঠ পর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয় যাতে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত যে সকল ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর পূর্ণ বা বেশি হয়েছে অথচ ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিগত কার্যক্রমে বাদ পরেছিল তাদের তথ্য নিয়ে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভোটার,হালনাগাদ,ইসি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close