নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৯ অক্টোবর, ২০১৮

সুবিধাবঞ্চিত গৃহভিত্তিক নারীকর্মীদের সহযোগিতা করছে ডিএসকে

বাংলাদশের অর্থনীতির মূল ধারার সঙ্গে নারীর সম্পৃক্ততা বেড়েই চলছে। মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধিতে নারীর অবদান অনস্বীকার্য। এ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের মেধা ও প্রচেষ্টা এগিয়ে নিচ্ছে দেশকে। এক সময়ের ঘরকন্যা বাঙালি নারী এখন শিল্প উদ্যোক্তা।

সোমবার রাজধানীর পল্লবীতে এক কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত ‘এমপাওয়ারিং উইমেন এন্ড বিল্ডিং সাসটেইনেবল লাইভলিহুড ইন আরবান বাংলাদেশ প্রকল্প- নেটওয়ার্ক মিটিং ফর এংগোজিং উইথ মাল্ডি সেক্টর’ নারী সংশ্লিষ্ট সহযোগিদের সাথে সংযুক্তি সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

এ সুবিধাবঞ্চিত ক্ষুদ্র নারী উদ্যেক্তা বা গৃহভিত্তিক নারী কর্মীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বেসরকারি এনজিও দুঃস্থ সহায়তা কেন্দ্র (ডিএসকে)। এছাড়া এসব গৃহভিত্তিক নারীকর্মীদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডিএনসিসির অঞ্চল-২ (মিরপুর) এর নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মোঃ সেলিম ফকির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অক্সফামের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রিফাত তানজিলা ও সাবেক শিক্ষক আলমগীর মিয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক।

অনুষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক তাহমিনা কবির বলেন, ‘নারী নেতৃত্ব ও সক্ষমতা উন্নয়ন কেন্দ্র’ একটি সেবাদানকারী সংস্থা যা স্থাপতি হয়েছে সুবিধা বঞ্চিত নারীদের জন্য। যারা নিয়মিত সামাজিক প্রথার কারণে বৈষম্য ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয় ও মজুরিবিহীন কাজের চাপে মাথা অবনিত রাখে। অথচ গৃহস্থলী কাজের কারণে আজ দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এসব সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জন্য কাজ করছে ডিএসকে।

এসব নারীরা কাজ করতে নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হন। এরমধ্যে ট্রেড লাইসেন্স অন্যতম। সরকারি হিসেবে ট্রেডলাইসেন্স করতে খরচ হয় সাড়ে তিন হাজার টাকা। অথচ এ ট্রেড লাইসেন্স করতে খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। এত টাকা খরচ ও পথে পথে নানা বিপত্তি ডিঙ্গিয়ে এ সুবিধাবঞ্চিত নারীরা এগিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের জন্য সরকারি সংস্থারদের অনুরোধ করব, যাতে তাদের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্য সেলিম ফকির বলেন, প্রত্যেকটি নারী পুরুষের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কাজ করে। ঘরে রান্নাবান্না, ঘর গোছানো, বাচ্চা সামলানো, চাকরিবাকরিও করেন তারা। অথচ এ সমাজে নারীদের কাজের কোন মুল্যায়ন করা হয় না। দেশের অর্ধেক জনশক্তির মুল্যায়ন না করে কখনো অর্থনৈতিকি অগ্রযাত্রায় যেতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, নারীদের এ উন্নয়নের পেছনে কাজ করছে সরকারি বেসরকারি অনেক এনজিও। আর সেগুলোর মধ্যে দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) অন্যতম। পিছিয়ে পড়া নারীদের বিভিন্ন কাজের প্রশিক্ষণ ও আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য ডিএসকে ধন্যবাদ জানাই। এর পাশাপাশি ডিএনসিসির পক্ষ থেকে এ সুবিধাবঞ্চিত নারীদের সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।

সভাপতির বক্তব্য জহিরুল ইসলাম মানিক বলেন, এ দেশে জনসংখ্যার মধ্যে অর্ধেকই নারী। এ নারীদের পিছনে ফেলে কখনও উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই পরিবারের সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে। একইসঙ্গে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের ভবিষ্যতে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রিফাত তানজিলা বলেন, বিশ্বের ৯০টি দেশে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের নিয়ে কাজ করছে অক্সফাম। বাংলাদেশে অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের নিয়ে ১৯৭১ সাল থেকে সুনামের সাথে কাজ করছে সংস্থাটি। নারীদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, মজুরিবিহীন কাজের স্বীকৃতি আদায় করা এবং অর্থনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন করা এই প্রকল্পের মুল লক্ষ্য।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিএসকে সম্পর্কে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক তাহমিনা কবির। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ধারার সঙ্গে নারীর সম্পৃক্ততা বাড়াতে এবং সহিংসতা প্রতিরোধে সুবিধাবঞ্চিত নারী গৃহভিত্তিক কর্মীদের জন্য কাজ করছে এনজিও দুঃস্থ সহায়তা কেন্দ্র। টেকসই জীবিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে শহরের নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পটি দুই বছরের জন্য নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিকে সহযোগিতা করেছে জন লুইস ফাউন্ডেশন।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ডিএসকে,গৃহভিত্তিক নারীকর্মী,সুবিধাবঞ্চিত নারী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close