রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধের আহ্বান পশ্চিমা দেশগুলোর
অধিকাংশ পশ্চিমা শক্তিধর দেশ রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধের জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সম্মেলনের ফাঁকে ব্রিটেন আয়োজিত মন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। গত রাতের ওই বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব এম. শহিদুল হক সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, অধিকাংশ দেশ মুসলিম রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে মিয়ানমার নেত্রী অং সান সুকি’র ওপর চাপ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মিয়ানমার নেত্রীর প্রতিনিধিত্বকারী উপদেষ্টা থাং তুন রোহিঙ্গা নির্যাতনের ওপর বিভিন্ন প্রতিবেদন, ছবি ও তথ্যকে ‘মনগড়া’ অবহিত করে অত্যাচারের অভিযোগ অস্বীকার করার চেষ্টা করে। কিন্তু অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিরা মিয়ানমার নেত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে জানান, তারা ওই অঞ্চলের বাস্তবিক অবস্থা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন।
ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন মিয়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গাদের নির্যাতন বিষয়ক বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকে এই সহিংসতাকে জাতিগত নির্মূল হিসেবে আখ্যায়িত করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. এইচ. মাহমুদ আলী। এতে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানী, রাশিয়া, সুইডেন, সুইজাল্যান্ড, চীন, ডেনমার্ক, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জেষ্ঠ্য কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে মিয়ানমারের পক্ষে সুচি’র উপদেষ্টা অংশগ্রহণ করেন ।
মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কারণে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা এড়াতে অং সান সুকি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। গতমাসে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেনা অভিযানে পরে প্রায় ৪ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। জাতিসংঘ এই নৃশংস হত্যাকান্ডকে জাতিগত নির্মূল হিসেবে অবহিত করেছে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে অংশগ্রহণকারী মন্ত্রীরা রোহিঙ্গাদের মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় ও অন্যান্য সাহায্য করায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং দ্রুত তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। বরিস জনসন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান সহিংশতাকে মিয়ানমারের জন্যএ কটি কলঙ্ক হিসেবে অবহিত করে এ সকল কার্যক্রম বন্ধে অং সান সুকি ও তার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে জনসন বলেন, যখন মিয়ানমার গত কয়েক বছরে গণতন্ত্রের উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেই মুহূর্তে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন দেশটির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করল। এই সহিংসতা বন্ধ করা মিয়ানমান নেত্রী অং সান সুকি ও সকারের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বলে তিনি জানান।পিডিএসও/মুস্তাফিজ