reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১২ জানুয়ারি, ২০২৪

লোকচক্ষুর অন্তরালে মডেল তাসনিয়ার ভিন্ন জগৎ

ফাইল ছবি

নতুন প্রজন্মের মডেল ও অভিনেত্রী ছিলেন তানজিম তাসনিয়া। তিনি তার ক্যারিয়ারের বেশি দূর যেতে পারেননি। শুরু থেকেই জড়িয়েছেন নানা বিতর্কে। ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্যকে ফাঁসানোর তথ্য উঠে এসেছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

সবশেষ শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় ‘আত্মহত্যা’ করেছেন তাসনিয়া।

তার এই মৃত্যু নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। অনেকে বলছেন, বেপরোয়া ও বিলাসী জীবন-যাপনের নিয়ন্ত্রণ টানতে না পেরে এ করুণ পরিণতি হয় তাসনিয়ার।

গত বছর যখন তার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, তখন তার ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে ফেসবুক লাইভে ও কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে কথা বলেন তাসনিয়া।

এসব লাইভে তাসনিয়া প্রকাশ করেন তার সঙ্গে কার কার সম্পর্ক ছিল এবং কাদের কাছ থেকে তিনি আর্থিক সহায়তা নিয়েছেন।

তদন্তে উঠে আসে ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি গুলশান থানায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক আমজাদ হোসেনের নামে ধর্ষণের মামলা করেন তাসনিয়া। পরবর্তীতে পিবিআইয়ের তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয় এই মামলা। প্রকাশ পায় তারা বেশ কয়েক বছর ধরে প্রেম করছিলেন।

এ ঘটনার মাত্র চার মাস পর, একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ইফতেখারুল আলম নামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পর্নো ছবি ছড়ানোর অভিযোগে সাইবার আইনে মামলা করেছিলেন তাসনিয়া। কিন্ত সিআইডির তদন্তে বেরিয়ে আসে ইফতেখারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। করেছেন বিদেশ ভ্রমণও। বিভিন্ন সময়ে ইফতেখারুলের কাছ থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তাসনিয়া। পরবর্তীতে মিথ্যা মামলা করেন ইফতেখারের বিরুদ্ধে।

সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাসনিয়া পেশাদার ব্যাকমেইলিংয়ে জড়িত। মূলত ধনাঢ্য পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। আরেক তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে আসে একই চিত্র।

এছাড়া শোবিজ অঙ্গনের আরেক মডেল ইশরাত পায়েলের স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তাসনিয়া। এ বিষয়ে ইশরাত পায়েলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার একটি ফোন রেকর্ড ফাঁস করেন তিনি। সেই সঙ্গে পায়েল দেশে ফিরলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন।

এসব তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর, গেলো বছর নির্মাতা জসীম আহমদকে ফোন রেকর্ড ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করে তাদের মধ্যকার ২০২০ সালের একটি পুরনো মামলাকে সামনে নিয়ে এসে অনলাইনে বক্তব্য দেন তাসনিয়া।

এসময় জসীম আহমেদের আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করেন। সাইবার আইনে মামলার আবেদনের কথা জানান। আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহেদুল আজম গণমাধ্যমে বলেন, তাসনিয়া ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল করতেন।

একের পর এক বিতর্কে জরানোর পর বেশ কিছুদিন ধরেই তাসনিয়া রহমান তার ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রাম আইডি ডিএক্টিভেট করে আড়ালে চলে যান। সম্প্রতি আশিম খন্দকার নামে ইউল্যাবের এক ছাত্রের সঙ্গে ‘লিভিং রিলেশনে’ ছিলেন তাসনিয়া। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে তাসনিয়ার নানা অপরাধ প্রকাশ্য আসতেই আশিম তাকে ছেড়ে গেলে লাইভে এসে আত্মহত্যার ঘোষণা দেন তিনি।

লাইভে আশিম সম্পর্কে তাসনিয়া বলেন, আশিমের সঙ্গে আমার একটা বাসা নেওয়া ছিল। এখান আশিম দায়িত্ববোধ থেকে সরে গেছে। আমরা ঠান্ডা মাথায় কথা বলতে গেছিলাম, কিন্তু আশিম পুরো দায়িত্ব থেকে সরে গেছে। আমাদের তো স্বামী-স্ত্রী হিসেবে চুক্তি আছে। আমি এটা তার ভাই আর মাকেও বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো সাহায্য করেনি।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অভিনেত্রী,মডেল তাসনিয়া,লিভিং ইন,ব্ল্যাকমেইল,পরকীয়া
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close