নুর নবী রবিন, চবি

  ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কলকাকলিতে সকাল-সন্ধ্যা 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদের পাশে পাখির আশ্রয়স্থল। ছবিটি শুক্রবার তোলা -নুর নবী রবিন

পশ্চিম দিকে সূর্য একটুখানি হেলে পড়লেই ফিরতে থাকে পাখিরা। শুরু হয় তাদের কিচিরমিচির। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে শব্দের তীব্রতা বেড়ে যায়। পুরো এলাকায় ছড়িয়ে যায় তাদের কলকাকলি। পুরোপুরি অন্ধকার না হওয়া পর্যন্ত পাখিদের এই কলতান চলতেই থাকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) আইন অনুষদ ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন মসজিদের পাশের গাছগুলোতে প্রতি সন্ধ্যায় আশ্রয় নেওয়া পাখিদের গল্প এটি।

প্রকৃতির কোলে গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। পাহাড়ি জায়গাজুড়ে বিশাল এ ক্যাম্পাস। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বহু বছরের পুরোনো গাছ। প্রতিদিন বিকাল গড়িয়ে পড়ার সময় থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি গাছগুলোতে আসতে শুরু করে। এখানেই আশ্রয় পাখিদের। অনেক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের মধ্যবর্তী মসজিদের পাশের গাছগুলোতে পাখিরা এসে আশ্রয় নিচ্ছে। প্রতি সন্ধ্যায় তারা আসে আর ভোরে সূর্য উঠার সময় বেরিয়ে যায়। পাখিদের এই আসা ও যাওয়ার সময় কলকাকলিতে সরব হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। মুগ্ধ হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং আশপাশের মানুষজন। ব্যস্ততা ভুলে কিছুক্ষণ উপভোগ করেন তারা পাখি ও পাখিদের গান।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগ ১৬ থেকে ১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র নাজমুল হাসান বলেন, রোজ সন্ধ্যায় এখানকার গাছগুলোর ডালপালায় নানা রঙের পাখির কিচিরমিচির শুনতে পাই। খুব বেশি তাড়া না থাকলে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি। পাখপাখালির এ কলকাকলি আমাকে ভীষণ মুগ্ধ করে। যে কোনো প্রকৃতিপ্রেমীর জন্য এ দৃশ্য লোভনীয় ও আনন্দের।

বাংলা বিভাগ ১৭ থেকে ১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিয়া জান্নাত কাঁকন বলেন, সন্ধ্যায় পাখিদের গাছে ফেরার দৃশ্য খুব সুন্দর, দেখতে ভালো লাগে। তাদের চেঁচামেচিও খুব উপভোগ করি।

আইন অনুষদের কাছে ২নং গেট এলাকায় বাস করেন মাদ্রাসা শিক্ষক মো. খলিল। তিনি বলেন, অনেক দিন ধরেই সন্ধ্যার দিকে এখানকার গাছগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি আসে; আবার ভোরেই চলে যায়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আবদুল কাইয়ুম। বড় হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এলাকায়। যুক্ত ছিলেন ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায়। ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি। তিনি প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখি এখানে প্রতিদিন পড়ন্ত বিকালে অনেক পাখি আসে। তাদের চেঁচামেচি শুনি। সুন্দর একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়। শত শত পাখি দেখতে ও তাদের কলকাকলি শুনতে খুব ভালো লাগে। তবে দিন দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ কাটা হচ্ছে। এতে পাখিদের থাকার জায়গা কমে যাচ্ছে। আগে ক্যাম্পাসের এ গাছগুলোতে আরো বেশি সংখ্যক পাখি আসত। সে তুলনায় এখন অনেক কম পাখি আসে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা দরকার। উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন প্রশাসনের।

ভিডিও

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কলতানে সকাল-সন্ধ্যা,কলতান,সকাল-সন্ধ্যা,চবি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close