জুবায়ের জামিল, রাবি
রাবি উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্রলীগের তালা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান করছেন চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতারা। রোববার রাত সোয়া ৯টার দিকে বাসভবনের গেটে ও ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলান তারা।
বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালের এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান বলেন, ১৯৭৩-এর এ্যাক্ট অনুযায়ী চারটা বিশ্ববিদ্যালয় চলে, তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একটি। গত কয়েকদিন আগে দেখেছি, উপাচার্যের ওপর কিছু কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে।
আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে জানতে চেয়েছি, তারা এটি পারেন কিনা? তখন স্যার বলেছেন, এটা ৭৩-এর এ্যাক্টের লঙ্ঘন। এটা তাদের পারসোনাল ইন্টারেস্টের জায়গা থেকে আমাকে ব্লক করছে। আমরা কারণ জানতে চেয়েছি কিন্তু স্যার কারণ জানাতে পারেননি। তখন আমরা বলেছি, আপনিতো ৭৩ এ্যাক্টের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারছেন না। স্যার যতক্ষণ না ব্যাখ্যা দিতে পারছেন, ততক্ষণ আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে অফিস চলাকালীন রেজিস্ট্রার দপ্তরের এডহকে জালাল নামের একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরি প্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন।
কিছুক্ষণ অবস্থানের পর সন্ধ্যা ৭টায় চাকরিপ্রত্যাশী ও রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাদেকুল ইসলাম স্বপন এবং রাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছ হোসেনের নেতৃত্বে ছয়জনের প্রতিনিধিদল উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে বাসভবনের ভেতরে যান।
তবে উপাচার্য বিশ্রামে থাকায় তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করলে বাইরে এসে তারা উপাচার্যের ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, আজ এডহকে একজনের চাকরি হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কেন চাকরি হচ্ছে না, আমরা সেটি জানতে উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম ।
উপাচার্য আবদুস সোবহান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রতিবন্ধী একটা ছেলেকে চাকরি দেওয়ার জন্য। যেহেতু নিয়োগ বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে তাই আমি সচিবকে জানিয়েছি, তিনি আমাকে নিয়োগ দিতে বলেছেন এবং নিয়োগ দিয়েছি।
এর প্রেক্ষিতে সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ নেতারা এসে চাকরির দাবি করে। আমি জানিয়েছি, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন আমি নিয়োগ দিতে পারবো না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, বাসভবনের মধ্যে অবরুদ্ধ আছেন উপাচার্য আবদুস সোবহান, উপউপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা, উপউপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান এবং কয়েকজন সহকারী প্রক্টর।
মূলত করোনার আগে বেশ কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছিল, সেগুলো করোনার কারণে নিয়োগ কার্যক্রম পুরা করা যায়নি। অনেক চাকরিপ্রত্যাশী আছেন কিন্তু শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা আছে, তাই স্যারতো কিছু করতে পারবেন না। একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি যেন তৈরি হয় সেজন্য আমরা আছি।
প্রায় ৩০ জন চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের নেতাকর্মী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করেন।
পিডিএসও/হেলাল