রিয়াজ মুন্না, চবি

  ১১ নভেম্বর, ২০১৯

চবিতে ভর্তিচ্ছুদের দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-ছাত্রজোট

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে দিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েও ভর্তি হতে না পারা মানোন্নয়নকৃত ভর্তিচ্ছুদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে ভর্তিচ্ছুদের দাবি আদায়ের কথা বলেছেন শাখা ছাত্রলীগ ও বামজোটের নেতৃবৃন্দ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে চবির ছাত্র সংগঠনগুলোর মাঝে এ রকম একতা নজীরবিহীন।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগ এবং প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সম্মিলিত জোট দাঁড়িয়েছে এক কাতারে। ্

বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবির হাসান তিতাসের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মুনতাছির ও সুমাইয়া মেহেরাজ, বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ রূপক ,ছাত্রলীগ নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দূর্জয়,ইমাম উদ্দিন ফয়সাল পারভেজ, শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু, শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদ সদস্য ধীষণ প্রদীপ চাকমা ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সায়মা আক্তার নিশো।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ সভাপতি গৌরচাঁদ ঠাকুর অপু, সাধারণ সম্পাদক আশরাফী নীতু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আইরিন সুলতানা সহ অন্যান্যরা।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মুনতাছির বলেন, ‘তাদের সার্কুলার অনুযায়ী আমরা মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে পারব বলে আমরা জেনেই পরীক্ষা দিই। তারা আমাদের আবেদন ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণসহ ফলও প্রকাশ করেছে। আমরা কত কষ্ট করে একবছর নষ্ট করে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছি। একজন শিক্ষার্থী নয় শুধু, এর মাধ্যমে পুরো পরিবারের স্বপ্ন নষ্ট করে দিচ্ছে। একটি বছর নষ্ট করেছি শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব বলে। এখন আমরা চাই আমাদের ভর্তি করানো হোক।’

শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, কাউকে দোষ দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা না দেওয়া উচিত। উপাচার্য মহোদয় সবার সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এ বিষয়ের সমাধান করবেন বলে আশা করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন রয়েছে, এসবের মাঝে জটিলতাও রয়েছে। এসব জটিলতা দূর করে কীভাবে উত্তীর্ণদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া যায় সে ব্যবস্থা করুন। কারো চোখের জল নয়, আমরা চাই সুষ্ঠু সমাধান। ছাত্রলীগ সবসময় এ ধরনের যৌক্তিক দাবির পাশে থাকবে।

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন হয়েছে। কিন্তু সার্কুলারে অসঙ্গতির কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারছেন না। যেখানে অস্পষ্টতা থাকে, সেখানেই জটিলতা সৃষ্টি হয়। এই শিক্ষার্থীরা ক্লান্ত, তাদের অভিভাবকরা আসছে। আমরা তাদেরকে স্পষ্ট কোনো জবাব দিতে পারছি না। কতটা অসহায় আর নির্মমতার শিকার হলে এভাবে তারা সাহায্য চাইতে পারে। এ ছেলেমেয়েগুলোর যেহেতু পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেহেতু তাদের সুযোগ দিতে হবে। ভুল সবারই থাকে, অতিদ্রুত বিষয়টির সমাধান করুন।’

ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য ধীষণ প্রদীপ চাকমা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভুক্তভোগী হয়। যারা ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে মেধার প্রমাণ দিয়েছে তাদেরকে অযোগ্য বলে উল্লেখ করছে। আইটি সেলের অস্পষ্টতার দায়ভার ছাত্ররা নেবে কেন। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হয় সে জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।’

শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি আইরিন সুলতানা বলেন, ‘ভুল প্রশাসনের হয়েছে শিক্ষার্থীদেরও হয়েছে। ভুল শুধরে নিয়ে তাদেরকে ভর্তির সুযোগ দিন। তাদের স্বপ্নটাকে ভেঙে দিয়ে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেবেন না।’

মানববন্ধনে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ছাড়াও প্রায় ৪ শতাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে অস্পষ্টতার জেরে আবেদন করলেও বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত করায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না এই শিক্ষার্থীরা। যদিও তাদের আবেদন গ্রহণ করে প্রবেশপত্র ও ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও ফল প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চবি,ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী,একজোট
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close