আব্দুর রহমান রাসেল, রংপুর ব্যুরো

  ২৫ অক্টোবর, ২০১৮

রাইস মিল বন্ধ, শ্রমিকদের মানবেতর জীবন যাপন

রংপুর নগরীর বাহার কাছনা ফিরোজা অটো রাইস মিলটি বন্ধ হওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছেন শত শত শ্রমিক। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মিলটি বন্ধ থাকায় নষ্ট হতে যাচ্ছে মিলে মজুদকৃত কয়েক শ’ মেট্রিকটন ধান। ফিরোজা অটো রাইস মিলের কর্মচারী ও প্রতিবেশি মোশারফ হোসেন, আমজাদ হোসেন ও আজিজুল এবং জাহিদুলসহ এলাকার লোকজন জানান, মিলের মালিক সকল কাগজপত্র ঠিক করে রসিক মেয়রকে দিয়ে মিলটি উদ্বোধন করেন।

কোনও ত্রুটি আছে কিনা জানার জন্য মিলটি প্রাথমিকভাবে চালু করা হয়। চালু হওয়ার পর প্রতিবেশি মোস্তাক ও জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মিল মালিকের মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়। এ কারনে জাহাঙ্গীর রাইস মিলটির বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ তুলে আদালতে একটি ‘মিথ্যা অভিযোগ’ দায়ের করেন। এ কারনে রাইস মিলটি বন্ধ হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফিরোজা অটো রাইস মিলের পাশে ন্যাশনাল টোব্যাকো, ভরসা জুটস মিলস্, বাবলু মিয়ার মিল চাতাল, মহুবার রহমান পার্টিক্যাল বোর্ড কারখানা, মন্টু মিয়ার মিল চাতাল, মায়া অটো রাইস মিল, সাবের মিয়ার মিল চাতাল, জেলেমা রহমান কোল্ড স্টোরেজ, তোফায়েল মিয়ার মিল চাতাল এবং ইসতিয়াক সাহেবের বড় একটি মুরগির ফার্মসহ ছোট বড় অনেক কল কারখানা আছে।

এতগুলো কারখানা চলছে, কিন্তু কেউ কখনও কারো বিরুদ্ধে কোনও দোষ ক্রুটি খুজতে যায়নি। কারো নামে কেউ কোনও অভিযোগও দায়ের করেনি। অথচ তারা জহুরুল ইসলামের সাথে প্রতিহিংসাবশত রাইস মিলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।

শ্রমিকদের দাবি, অবিলম্বে মিলটি চালু করে মিলের ভেতরে থাকা কয়েক শ’ মেট্রিকটন ধান নষ্টের হাত থেকে উদ্ধার করে শত শত শ্রমিক কর্মসংস্থানে ফিরে দেয়া হোক।

রইছিয়া মাদ্রাসার মোহতামিম হাবিবুল্লাহ ও বাহার কাছনা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, মিলটি থেকে কোনও ছাই বা পরিবেশ দূষণের মতো কোনোকিছু আমাদের চোখে পড়েনি। তার পরেও কে বা কারা মিলটির বিরুদ্ধে লেগে ‘মিধ্যে’ অভিযোগ করে মিলটি বন্ধের পায়তারা করছে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে কোনও ধরনের অভিযোগ নেই। বরং মিলটি চালু থাকলে এলাকার উপকার।

এ বিষয়ে অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর জানান, ‘আমি ডিসি অফিসে চাকরি করি। আমার কাছে মনে হয়েছে মিলটির কারনে এলাকার লোকজনের এবং পরিবেশের ক্ষতি হবে। তাই আমি অভিযোগ করেছি। তবে এখন অভিযোগের কারনে মিলটি বন্ধ না অন্য কোনও কারনে তা আমার জানা নেই।’

অপরদিকে মোস্তাক জানান, ‘ফিরোজা অটো রাইস মিলটি করার সময় আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। মিলটির সঠিক কোনও কাগজপত্র আছে কিনা জানা নাই। তাই এলাকার লোকজনের স্বাক্ষর নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি। সব ঠিক রেখে মিলটি চালু করলে কারো আপত্তি থাকবে না।’

রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, ‘এলাকায় কল কারখানা গড়ে উঠুক, লোকজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হোক এটা সবাই চায়। দুই তিন মাস আগে বাহার কাছনায় ফিরোজা অটো রাইস মিল উদ্বোধন করেছিলাম। কি কারনে মিলটি বন্ধ সঠিক জানি না। তবে মিলটি চালু থাকলে এই এলাকার লোকেরা কর্ম করে সুখে শান্তিতে থাকবে। এখন মিলটি বন্ধ থাকায় এলাকার মানুষজন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এটা শুনে খারাপ লাগল। মিলটি দ্রুত চালু করতে আমি সহযোগীতা করবো।’ ফিরোজা অটো রাইস মিলের মালিক জহুরুল ইসলাম জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর মিলটি পরিদর্শন করেছেন। তারা ছোট বড় যে ক্রুটিগুলো দেখিয়ে দিয়েছেন আমরা সেগুলো ইতোমধ্যেই ঠিক করে ফেলেছি। এখন স্থায়ী ছাড়পত্র দিলে মিলটি চালু করা হবে।

পিডিএসও/অপূর্ব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাইস মিল,বন্ধ,শ্রমিক,মানবেতর,জীবন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close