বরিশাল প্রতিনিধি

  ২৫ অক্টোবর, ২০১৯

বরিশাল আ.লীগে অব্যাহতির খড়গ শিপনের ওপর

বরিশাল নগরীতে আলোচিত শিশু মামুন গাজী হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় নিজ দলের কাছে চাপের মুখে পড়েছে পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা কাওসার হোসেন শিপন। এমনকি এখানকার অপরাধ জগতের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে দলের নাম ভাঙিয়ে অবৈধপন্থায় কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে দলটির অনেক নেতাকর্মীরাই এখন আলোচনা সমালোচনা করছেন। তিনি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারে বলে জানা গেছে। তাই শিপনের ‘দৌরাত্ম্য’ নিয়ে বরিশালের সচেতন মহলের মাঝে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছালে মহানগর আওয়ামী লীগ এবং মালিক সমিতির অন্য নেতারা নড়েচড়ে বসেছেন। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অবৈধ কর্মকান্ডের অভিযোগে এস এম জাকির হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, তালিকা করা হয়েছে, যারা অপকর্ম করে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে শ্রমিক লীগের সহসভাপতি মোকছেদ আলী গাজীর পুত্র শিশু সন্তান মামুন গাজীকে হত্যার ঘটনায় রূপাতলীর সাবেক কাউন্সিলর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ এবং তার ভাই কাওসার হোসেন শিপনসহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করা হয়। ওই মামলার বাদী মোকছেদ আলী গাজীকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় ফের সমালোচনার মুখে পড়েন শিপন। তার কর্মকান্ড নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার শিরোনাম হয়েছে। বিষয়টি বরিশাল সিটি মেয়র পর্যন্ত পৌঁছায় চাপের মুখে পড়তে হয় তাকে।

বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে বসার পর থেকেই শিপনের অপকর্মের ফিরিস্তি লম্বা হতে থাকে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাওসার হোসেন শিপন রূপাতলী হাউজিংয়ের ২০৮টি ভবনের প্রতিটি থেকে ৫০ হাজার টাকা আদায় করে ১৪টি রাস্তা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে রাস্তা না করে সর্বমোট ১ কোটি ৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাউজিংয়ের নাসিরের জমি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করে নিয়েছে কাওসার হোসেন শিপন। হাউজিং থেকে শিপন কর্তৃক ভুক্তভোগীরা হলো মো. জালাল, শাহীন, মো. ছাত্তার, মো. আলী, হাবিবুর রহমান।

বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির একটি সূত্র জানায়, শিপন এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠছে যে, সমিতির সভাপতিসহ বাস মালিকদের একাংশ শিপনের হুমকির মুখে থাকায় খোদ সমিতির কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছে না। এছাড়া দৈনিক ৮০টি বাস থেকে ১ হাজার করে চাঁদা আদায় করে শিপনের সহযোগীরা। শিপনের বড় ভাই ফিরোজ বরিশাল মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি, মেয়ে জামাই জিয়া উদ্দিন সিকদার মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকসহ তার পরিবারের সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং তারা একাধিক নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাস মামলার আসামি। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল মহানগর আ.লীগের এক নেতা জানান, শিপনের বিষয়ে দলের ভেতরে আলোচনা হয়েছে। যেকোনো সময় তিনি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন। এ বিষয়ে শিপনের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার টেলিফোন করলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close