নড়াইল প্রতিনিধি

  ২২ আগস্ট, ২০১৯

ঢাকা-নড়াইল-যশোর রেলের কাজ শুরু

পাল্টে যাবে ২০ জেলার জীবনযাত্রা

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় যশোর-নড়াইল-ঢাকা রেললাইনে নড়াইল অংশের কাজ শুরু হয়েছে। জেলার প্রায় ২২ কিলোমিটার মিটার বিভিন্ন এলাকায় বালু ভরাট করে রোলার দিয়ে সমান এবং চারটি রেলসেতু নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। স্বপ্নের এই রেললাইনের কাজ দেখতে প্রতিদিন আশপাশের গ্রামের অনেক মানুষ ভিড় করছেন।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে ৯টি জেলার ওপর দিয়ে যশোর পর্যন্ত এই ১৭২ কিলোমিটার মিটার ডুয়েল গেজ (ব্রডগেজ ও মিটারগেজ) আধুনিক এ রেললাইনটি নির্মাণকাজ করছে চিনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ লিমিটেড। এ রেললাইন ঢাকা-মাওয়া-কালনা-নড়াইল হয়ে যশোরের রূপদিয়া ও সিঙ্গিয়া রেললাইনের সঙ্গে সংযোগ ঘটবে। এ সংযোগস্থল থেকে একটি লাইন রূপদিয়া হয়ে বেনাপোল বন্দরে গিয়ে এবং অপরটি সিঙ্গিয়া-বাণিজ্যিক শহর নওয়াপাড়া হয়ে শিল্পাঞ্চল খুলনায় গিয়ে শেষ হবে। নড়াইল অংশে ২২ কিলোমিটারের মধ্যে লোহাগড়া পৌরসভার নারানদিয়া ও নড়াইল পৌরসভার দুর্গাপুর-ভওয়াখালী এলাকায় দুটি রেল স্টেশন হবে। ঢাকা থেকে লোহাগড়ার রেল স্টেশনের দূরত্ব ১২৩ ও দুর্গাপুর-ভওয়াখালী রেল স্টেশনের দূরত্ব ১৩৮ কিলোমিটার। ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের এই উপ-রুটটির কাজ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা।

সরেজমিন দেখা গেছে, সদরের দুর্গাপুর, রামচন্দ্রপুর, কইবিল, নলাবিল, লোহাগড়ার নারানদিয়া, মোচড়া, বসুপটিসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রাথমিকভাবে রেললাইনে বালি ভরাট ও রোলার দিয়ে সমান করা এবং রেলসেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। নড়াইল অংশে মোট চারটি নদীর ওপর চারটি রেলসেতু নির্মিত হবে। কালনা সেতু থেকে ৮০০ মিটার উত্তরে মধুমতি নদীর ওপর ১ হাজার ২১২ মিটার, লোহাগড়ার বসুপটি এলাকায় নবগঙ্গা নদীর ওপর ১০০ মিটার, সদরের বরাশোলা এলাকায় চিত্রা নদীর ওপর ১০০ মিটার এবং সদরের তুলারামপুর এলাকায় আফরা নদীর ওপর ১০০ মিটার রেলসেতু নির্মাণের প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, নড়াইল জেলায় রেলসড়কে ২৮টি মৌজার মধ্যে ৩৯০ দশমিক ৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ব্যক্তির জমি, গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ জমির মালিকরা ৪৭১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। তবে অধিগ্রহণ হওয়া জমির ক্ষতিপূরণের টাকা অধিকাংশ মালিক এখনো পাননি।

সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেললাইন প্রজেক্টের নড়াইল ও যশোর অংশের কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নড়াইল ক্যাম্পের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ন করা হচ্ছে। রেললাইনের কাজে নড়াইলবাসীর যথেষ্ট আগ্রহ এবং সহযোগিতা রয়েছে। জোরদারভাবেই কাজ এগিয়ে চলেছে।

নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাজী মাহাবুবুর রশিদ জানান, প্রথম অবস্থায় মাঠের উঠতি ফসলের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এখন জমির ক্ষতিপূরণও দেওয়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে পর্যায়ক্রমে প্রকৃত মালিকদের টাকা দেওয়া হবে।

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের উপপরিচালক (রিসেটেলমেন্ট) মহাব্বতজান চৌধুরী জানান, পদ্মা সেতু চালুর দিন থেকেই ঢাকা-নড়াইল-যশোর ট্রেন চলাচলের প্ল্যান রয়েছে এবং সেভাবেই কাজ চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close