ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ। শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনেতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আশ্বাস দেন। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে ঢুকলেও এর প্রভাবে ঘরচাপা ও গাছচাপা পড়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। সহস্রাধিক ঘর উড়ে যাওয়ার পাশাপাশি উপকূলের বিভিন্ন স্থানে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে নিচু এলাকা।

হানিফ বলেন, ফণীর যে মাত্রায় আঘাত হানার ও ক্ষয়ক্ষতির যে আশঙ্কা ছিল, সেটা হয়নি। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয়, সেজন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তারপরও যেটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যে পরিবারের যতটুকু ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠার জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা দেওয়া হবে। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া কথা বলেন হানিফ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎপেক্ষণ করা হয়। ফণী ২ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকতেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আগাম তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। প্রশাসনের পাশাপাশি আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও এমপিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেই।

কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার কথা জানিয়ে হানিফ বলেন, উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের মনিটরিং সেলে ১০০টি ফোন আসে। তারা তাদের এলাকার সমস্যার কথা জানালে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং সমস্যার সমাধান হয়েছে। যেসব এলাকায় ক্ষতি হয়েছে আমরা তার তথ্য নিচ্ছি। ফণীর প্রভাব কমে গেলে আওয়াম লীগের টিম যাবে।

সরকারের প্রস্তুতির ঘাটতির কারণে ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে বিএনপির অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, এবার যে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল, ইতিহাসে এর আগে এত প্রস্তুতির কোনো রেকর্ড নেই।

যে ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে, তার মধ্যে ছয়জন মারা গেছেন বজ্রপাতের কারণে। এই প্রাকৃতিক আঘাত কী করে ঠেকানো সম্ভব। তাদের এই অভিযোগ মিথ্যাচার, নোংরা রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।

তাদের এসব কথা অনেকে পাগলের প্রলাপ বলে মনে করে। তাদের প্রতি ধিক্কার ও করুণা জানাই। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে। তারা নিজেদের সমস্যাগুলো ঢাকার জন্যই সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়–য়া উপস্থিত ছিলেন।

"