শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
বাঁধ ভেঙে বন্যার পানিতে চলনবিলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
তিন লাখ গবাদিপশু নিয়ে মহাবিপাকে খামারিরা
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রাউতারা এলাকায় চলনবিলের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই অঞ্চলের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, চাটমোহর, সিংড়া, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, আত্রাই, রাণীনগর, শেরপুর ও নন্দীগ্রাম উপজেলার নি¤œাঞ্চল বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অঞ্চলের হাজারো গো-খামারে (বাথান) লালন-পালন করা তিন লক্ষাধিক গবাদিপশুকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে খামারিদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ-দুর্গতি পোহাতে হচ্ছে। দেশের দুগ্ধশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু ওই অঞ্চলের গো-খামারিরা বিপুল সংখ্যক গবাদিপশুকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় রোপিত উন্নত জাতের গো-খাদ্য (কাঁচা ঘাস) ইতোমধ্যে আকস্মিক বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এই অঞ্চলে কাঁচা ঘাসের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আকস্মিক বন্যার পানিতে বড়াল নদ-তীরবর্তী রাউতারা-নিমাইচড়া চলনবিল বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে মুহূর্তেই এই অঞ্চলের বিস্তৃত গোচারণ-ভূমির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে চলনবিলের বিস্তীর্ণ ওই চারণভূমিতে লালন-পালনকৃত গবাদিপশু শ্যালো নৌকার মাধ্যমে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে খামারিরা। কাঁচা ঘাস বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলনবিল অঞ্চলে গো-খাদ্য ব্যবসায়ীরা নৌকাযোগে বিভিন্ন স্থানের খামারিদের খড় সরবরাহ করছেন।
বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতি লিমিটেডের (মিল্কভিটা) সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সফল গো-খামারি মো. শফিকুর রহমান জানান, হঠাৎ করেই রাউতারা স্লুইসগেট সংলগ্ন এলাকায় রাউতারা-নিমাইচড়া রিং বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় বাঘাবাড়ী মিল্কশেড এরিয়াসহ চলনবিল অঞ্চলের তিন লক্ষাধিক গবাদিপশু নিয়ে গো-খামারিরা চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। ইতোমধ্যে এই অঞ্চলের গো-খামারিরা তাদের গবাদিপশুকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে এই অঞ্চলে হঠাৎ কাঁচা ঘাস সহ অন্যান্য গো-খাদ্যের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে।’
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলীমুন রাজীব বলেন, ‘রাউতারা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বালির বস্তা দিয়ে বাঁধের ওই স্থানটি সংস্কার করায় প্রতি বছরই এ ঘটনা ঘটে। ওই স্থানে ভাঙন রোধে স্থায়ী এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে বৃহত্তর চলনবিল অঞ্চলের অধিবাসীরা ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাবে।’
"