মুরাদনগর (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
৪৫ বছরেও নির্মাণ হয়নি স্মৃতিসৌধ
পালিত হয় না গণহত্যা দিবস
বিগত বছরের মতো এ বছরও নীরবে কেটে গেল কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বাখরাবাদ গণহত্যা দিবস। দিবসটি উদ্যাপনে স্থানীয় জনগণ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল কিংবা স্থানীয় প্রশাসন কেউই কোনো উদ্যোগ নেয়নি। শুধু স্বজনহারা মানুষ চোখের পানি ফেলে নিহতদের স্মরণ করলেন। অপরদিকে, শহীদের স্মৃতি রক্ষার্থে এলাকাবাসীর সৌধ নির্মাণ দাবি পূরণ হয়নি স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও। এ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে ১৯৯৬ ও ৯৭ সালে আলোচনা সভা, চিত্র প্রদর্শনী ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’ প্রদর্শিত হলেও উদ্যোগের অভাবে এখন আর হচ্ছে না। ফলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৪ মে এ দিনে পাক হানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহযোগিতায় উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজার সংলগ্ন হিন্দু-অধ্যুষিত গ্রাম বাখরাবাদে নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে দেড় শতাধিক হিন্দু নারী-পুরুষকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা শেষে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে লুটপাট করে পাক হানাদার বাহিনী। পাক হানাদার বাহিনী হত্যাযজ্ঞের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ২১ জন ব্যক্তিকে পার্শ্ববর্তী দেবিদ্বার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে পরদিন ১৮ জনকে একসঙ্গে গুলি করে হত্যা করে। এদের মধ্যে দক্ষিণ বাখরাবাদ গ্রামের শহীদ হরেন্দ্রচন্দ্র সাহার ছেলে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া হরেকৃষ্ণ সাহা জানান, একাত্তরের ২৪ মে ভোর ৫টার দিকে পাক হানাদার বাহিনী আমাদের গ্রামে ঢুকে হত্যাকা- চালায়, হত্যাকা- চলে বেলা ২টা পর্যন্ত। বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাটসহ নারী ধর্ষণ করে। বাখরাবাদ গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শী, রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান সফু মিয়া সরকার জানান, এটি একটি নৃশংস হত্যাযষ্ণ। এ বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের বীভৎস চিত্র প্রত্যক্ষ করে আজও শিহরিত হই। ঝোপঝাড়ে, আনাচে-কানাচে এবং পাশে বয়ে যাওয়া খালে অনেক লাশ পড়ে থাকতে দেখি।
"