ঝালকাঠি ও তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
দুই স্থানে আওয়ামী নেতার হাতে অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেয়া নিয়ে ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আকনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। এর প্রতিবাদে গত সোমবার (২৭ মার্চ) স্কুলে তালা লাগিয়ে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ ও বিক্ষোভ করে অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বিচারের আশ^াস দিয়ে অবরোধ তুলে নিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পালনের জন্য ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুস সোবাহান খানের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ সাতুরিয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নেয়। এর জেরে অপর গ্রুপের নেতা হুমায়ুন কবির রোববার দুপুরে প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আকনের উপর চড়াও হন।
প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক আকন অভিযোগ করে জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বাসায় যাওয়ার পথে এ বিষয় নিয়ে বাকবিত-ার এক পর্যায় হুমায়ুন কবির কয়েকটি কিল-ঘুষি এবং চড়-থাপ্পড় মেরে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির জানান, স্কুলের সকল বিষয়ই প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছে মত করেন। তাই এটা ঘটেছে। পরে স্কুল সভাপতি তার বাসায় বসে মিলিয়েও দিয়েছেন। রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস প্রধান শিক্ষককে শারীরিক লাঞ্ছিতের ঘটনা নিশ্চিত করেন।
অপরদিকে রাজশাহী তানোর উপজেলা প্রতিনিধি জানান, উপজেলার সরনজাই ডিগ্রী কলেজ চত্বরে শিক্ষার্থীদের বরণ, বিদায় ও বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ম-লকে প্রধান অতিথি না করায় অনুগতদের নিয়ে সভা প- করে কলেজ অধ্যক্ষকে অকথ্য ভাষায় গালাগালী করে। অধ্যক্ষ ইমারত আলী ইউপি চেয়ারম্যানের এমন আচরণের প্রতিবাদ করলে তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে এনে মাটিতে ফেলে পিটানো হয়। গত রোববার দুপুরে সভা চলাকালীন সময়ে ঘটা এই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারী, অভিভাবকবৃন্দ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সরনজাই ডিগ্রী কলেজে বিজয় দিবসের পূর্বঘোষিত আলোচনা অনুষ্ঠানে কলেজে পরিচালনা কমিটির সভাপতি এ্যাড. একরামুল হক সভাপতি করা হয়। এ সময় সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক তাকে কেন সভাপতি করা হয়নি জানতে চায় ও তার লোকজন দিয়ে হামলা করে প্যান্ডেলের চেয়ার ভাংচুর এবং অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করা হয়। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা এক পর্যায়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া দিলে ইউপি চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে পালিয়ে রক্ষা পায়।
অধ্যক্ষ ইমারত আলী জানান, চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক উদ্দেশ্যে প্রণোদিত হয়ে তার ওপর হামলা ও অনুষ্ঠান পন্ড করেছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বলেন, অধ্যক্ষ তাকে এড়িয়ে চলেন এ জন্য অধ্যক্ষকে শতর্ক করা হয়েছে।
"