প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ মে, ২০১৯

মির্জাগঞ্জ-বদলগাছীতে ভিজিডি চাল বিতরণে অনিয়ম

কালোবাজারে চাল বিক্রি

সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (ভিজিডি) প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্র সুবিধাভোগী ও মহিলাদের জন্য স্বল্প মূল্যে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে হতদরিদ্রের তালিকায় নাম না দিয়ে স্বচ্ছল পরিবারের নাম দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) নিকট লিখিত দিয়েছেন ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য রুহুল কুদ্দুস।

এদিকে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ভিজিডির কার্ডধারী দুস্থ মহিলাদের চাল কালোবাজারে বিক্রি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা।

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদ ২০১৫-১৬ এবং ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের উপকারভোগী ভিজিডি কার্ডধারীদেরকে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের নতুন তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করেছেন। নিয়ম অনুযায়ি তার এই তালিকায় থাকার কথা না। এমনিক স্বচ্ছল পরিবারের নামও আছে এই তালিকায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে মোট ৩৪২ জন উপকারভোগী নতুন তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করার কথা। কিন্তু তালিকা তৈরির বিলম্ব হওয়ায় চলতি বছরের ৫ মাস অতিবাহিত হলেও উপকারভোগীরা এখন পর্যন্ত ভিজিডির চাল পাননি।

এদিকে তালিকা তৈরীতে বিলম্ব হওয়ায় মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে ৩৪৪ জন, আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে ৩৪২, দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নে ৩৩০ ও কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নে ২৭৪ জন উপকারভোগীদের মধ্যে এখনো চাল বিতরণ করা হয়নি। অথচ নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেই তালিকা তৈরি করে জানুয়ারির শেষের দিকে ভিজিডির চাল বিতরণের কথা। ফলে উপজেলা প্রশাসন থেকে চালের ডিও হলেও এখনো তা গোডাউনে পড়ে আছে।

আমড়াগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান আহম্মেদ বলেন, ভিজিডির তালিকা তৈরিতে কোন অনিয়ম করিনি। তবে আমার ইউনিয়নে মেম্বারদের তালিকা তৈরিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত ভিজিডি চাল বিতরন করা হয়নি। ঈদের আগেই ভিজিডির চাল বিতরন করা হবে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোসাম্মৎ শিরিন সুলতানা বলেন, অভিযোগটি আমি দেখিনি। তবে আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে ভিজিডি প্রনয়ণে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বদলগাছী (নওগাঁ) সংবাদদাতা জানান, নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ভিজিডির কার্ডধারী অধিকাংশ মহিলারা ১৬.৬৬ টাকা কেজিতে প্রাপ্ত চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলায় ১ হাজার ৯১২ জন দুঃস্থ মহিলার নামে কার্ড রয়েছে। উপজেলার খাদ্যগুদাম থেকে জনপ্রতি প্রতি মাসে ৩০ কেজির বস্তা হিসাবে চেয়ারম্যানদের সরবরাহ করা হয়।

চলতি মাসের চাল বিতরণকালে গত বৃহস্পতিবার কোলা ইউনিয়নের কার্ডধারীদের কথা প্রসঙ্গে জানান, দু-একজন বাদে সবাই ৩০ কেজি চালের বস্তা ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করে। প্রতিটি ইউনিয়নের একই চিত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় কয়েকজন কার্ডধারী জানান, যেখান থেকে চাল আসে আবার সেখানেই চলে যায়। উপজেলা সদরের কতিপয় চাতাল মালিকদের নিকট অধিকাংশ চাল বিক্রি করা হয়। পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিকট সামান্য লাভে বিক্রি করা হয়।

কোলা ইউনিয়নের সচিব মোছা. আঞ্জুয়ারা বলেন, পরিষদ চত্বরের বাহিরে রাস্তায় চাল কেনাবেচা হয়ে থাকে। তবে বদলগাছী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শেখ মো. জাকারিয়া মুঠোফোনে বলেন, এসব অভিযোগ সত্য নয়। ভিজিডির চাল সরবরাহ করার পর তা আর অন্য কোন উপায়ে খাদ্যগুদামে ক্রয় করা হয় না।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনোরঞ্জণ পাল প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, ভিজিডির চাল বাজারে বিক্রি না করার নির্দেশ রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close