গাজীপুর প্রতিনিধি

  ০৭ অক্টোবর, ২০১৮

গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে ভাস্কর্য ‘অনুপ্রেরণা ১৯’ উদ্বোধন

গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধের ‘প্রথম সশ্রস্ত্র প্রতিরোধ দিবস’ কে স্মরণ করে ভাস্কর্য ‘অনুপ্রেরণা ১৯’ নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে জেলা সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। গতকাল শনিবার বিকেলে ভাস্কর্যটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও ১৯ মার্চ প্রথম সশ্রস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের অ্যাকশন কমিটির আহবায়ক এ্যাড. আকম মোজাম্মেল হক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সেনা প্রধান ও মুক্তিযুদ্ধের সময় দ্বিতীয় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (যার সদর দপ্তর ছিল গাজীপুরের ভাওয়াল রাজবাড়ি) সেকেন্ড ইন কমান্ড মেজর এ কে এম শফিউল্লাহ্, সিটি মেয়র এ্যাড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, জেলা মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান, জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস ছাত্তার মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাড. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া।

উল্লেখ, ১৯৭১ সালে ১৯ মার্চ আকস্মিকভাবে পাকিস্তানি ব্রিগেডিয়ার জাহানজেবের নেতৃত্বে রেডিমেন্ট গাজীপুর জয়দেবপুরস্থ দ্বিতীয় ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিরস্ত্র করতে উপস্থিত হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মেশিন টুলস ফ্যাক্টরী, ডিজেল প্লান্ট ও সমরাস্ত্র কারখানাসহ গাজীপুরের মুক্তিকামী জনগণ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জয়দেবপুরে জড়ো হয়। এ সময় তারা জয়দেবপুর রেলগেট, ঢাকা-গাজীপুর সড়কের বিভিন্নস্থানে ব্যারিকেট দেয় যাতে অস্ত্র নিয়ে যেতে না পারে। এদিকে ব্যারিকেট দেয়ার সময় টাঙ্গাইলে রেশন পৌছে দিয়ে একটি কনভয় এ রেজিমেন্টে ফিরছিল। জনতা সে কনভয় আটকে কনভয়ে থাকা ৫ জন সৈন্যের চাইনীজ রাইফেল কেড়ে নেয়। ব্যারিকেট সরানোর জন্য ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব কৌশলে বাঙ্গালি সৈন্যদের সামনে এবং পাঞ্জাবি সৈন্যদের পেছনে রাখেন এবং জনতার উপর গুলির নির্দেশ দেন। বাঙ্গালি সৈন্যরা জনতার উপর গুলি না করে ফাঁকা গুলি ছুরে। এ সময় জয়দেবপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উপর থেকে পাকিস্থানীরা জনতা ওপর গুলি ছুড়ে। এ প্রতিরোধ যুদ্ধে হুরমত আলী, নিয়ামত আলী ও মনু খলিফা শহীদ হন। এ ছাড়া গুলিতে আহত হন কানু মিয়া, ডা. ইউসুফ, সন্তোষ মল্লিক, শাহজাহানসহ আরো অনেকে। পরে আহতদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কানু মিয়া।

ওই সময় উত্তালমুখর বাংলাদেশে শ্লোগান হয়ে উঠেছিল ‘জয়দেবপুরের পথ ধর বাংলাদেশ স্বাধীণ কর’।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close