প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৭ আগস্ট, ২০১৮

জমে উঠেছে জেলার হাটগুলো

সপ্তাহজুড়েই পশুর হাট

ঈদুল আযহার আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। জাতীয় শোকদিবসে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঙালি ভোগ আয়োজনের মধ্য দিয়ে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ঈদের পশুর হাট। ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকার জমজমাট ২৭টি বৃহৎ কোরবানীর পশুর হাট। দেশের অন্যতম বৃহৎ পশুর হাট ফরিদপুরের টেপাখোলা পশুর হাট এখন ক্রেতা-বিক্রেতা মুখর। পাবনার বেড়া পৌরসভার সিঅ্যান্ডবি চতুর হাটে চলছে কোরবানীর পুশু বিক্রি। এছাড়া উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ পশুর হাট জয়পুরহাটের পাঁচবিবি গোহাটা এখন বেশ জমে উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতির কারণে সপ্তাহের নির্ধারিত দিন ছাড়াও বসছে পশুর হাট। ঈদের আগপর্যন্ত এভাবেই চলবে বলে জানিয়েছেন হাটের ইজারাদারগণ। আমাগের প্রতিনিধিদের পাঠান খবরÑ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকার ২৭টি কোরবানীর পশু হাটের মধ্যে ভাটই, গাড়াগঞ্জ, শৈলকূপা, খালিশপুর, এলাঙ্গী, বারোবাজার, হরিণাকুন্ড, ডাকবাংলা, মধুপুর, গোয়ালপাড়া, মধুহাটি এবং সাধুহাটি সবচেয়ে বড় পশুর হাট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মৌসুমী ব্যবসায়ীদের ভিড়ে জমজমাট এ পশু হাটগুলো। এসব হাটে ৪০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যেই মিলছে পছন্দের গরু।

ঝিনাইদহ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর জেলার ৬ উপজেলায় ৫৩ হাজার ৮শ গরু ও ৪২ হাজার ৫শ ছাগল ভেড়া প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। খামারিরা যেন কোন প্রকার ঔষধ ব্যবহার না করেন সে ব্যাপারে তাদের পরামর্শ দেওয়া ও তদারকি করা হয়েছে। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যরা টহল জোরদার করেছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, বৃহত্তর ফরিদপুরের সর্ববৃহৎ টেপাখোলা পশু হাট ও চরাঞ্চলের মানুষের আফজাল মন্ডলের পশুর হাটসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজারের চলছে কোরবানীর পশু বেচাকেনা ধুম। এই হাটগুলো সাধারণত সপ্তাহে দুই দিন হাট বসলেও ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিনই হাটগুলোতে গরুর আমদানি হয়।

ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা পশুর হাটে পার্শবর্তী কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, যশোর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জসহ আশে পাশের জেলার ক্রেতা-বিক্রেতারা এসে গরু কেনাবেচা করেন। এছাড়াও চরাঞ্চলের মানুষের পছন্দের আফজাল মন্ডলের হাটেও বিভিন্ন জেলার ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে।

আফজাল মন্ডলের হাটের সত্বাধিকারী খোকনুর রহমান তুহিন মন্ডল জানান, চরাঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে গত দুই বছর ধরে এখানে গরুর হাট বসে। চরাঞ্চলের ছোট ছোট খামারিদের সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজা করে থাকে। হাটে আশে পাশের এরাকার দেশী গরু উঠেছে।

প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, সরকারি তালিকা ভূক্ত জেলার সকল বাজারের আমাদের মেডিক্যাল টিম কাজ করছে, আমরা চেষ্টা করছি সুস্থ ও সবল পশু হাটগুলোতে বেচা-কেনা হোক। আমাদেও এ কার্যক্রম ঈদের আগের রাত পর্যন্ত চলবে।

পাবনার বেড়া প্রতিনিধি জানান, পাবনার বেড়া পৌরসভার সিঅ্যান্ডবি চতুর হাটে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে কোরবানির পশু কিনতে আসেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। প্রতি মঙ্গলবার এখানে পশুর হাট বসলেও কোরবানী সামনে রেখে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত প্রতিদিন হাট চলবে বলে জানান হাটের ইজারাদাররা। গত বুধবার চতুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ছোট-বড় ষাড়-মহিষ, বলদ, বকনা-গাভীসহ প্রায় ৯ থেকে ১০ হাজার গরু হাটে এসেছে।

হাটের ইজারাদার মিজানুর রহমান (উকিল) ও ইদ্রিস আলী জানান, হাটে ব্যবসায়ীদের সব প্রকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীদের ট্রাক-ট্রলি রাখার ব্যবস্থা, গরু গাড়িতে উঠানো-নামানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে হাটে ছাগলের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন হাট অপর ইজারাদার রফিকুল ইসলামসহ অনেক ক্রেতা ও ব্যবসায়ী। সাথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ জানান, চতুর হাটে গরু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি প্রতিনিধি জানান, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি কোরবানির পশুর হাট বেশ জমে উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার ছিল উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ হাট পাঁচবিবি গোহাটা।

সরজমিনে গোহাটা পরিদর্শনে দেখা যায় দেশি জাতের গরু বেশি। ব্যাপারী ও পশু ব্যবসায়ী বললেন, ঢাকা বিক্রমপুর, সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালী, বগুড়া, ময়মংসিং, কিশোরগঞ্জ, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যপারী সকাল থেকে এই হাটে গরু মহিষ ও খাসী কিনতে শুরু করেছেন। দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রায় ২৫ ট্রাক গরু মহিষ বিভিন্ন স্থানের ঈদের হাটে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। এছাড়াও আড়াই থেকে তিনশত নছিমনে করে গরু ছাগল বিভিন্ন স্থানের ঈদের হাটে পাঠানো হয়। আগামী শুক্রবারে এখানে হাট বসবে বলে জানান ইজারদার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close