ক্রীড়া প্রতিবেদক
রানে ফিরতে মরিয়া সাব্বির
বাংলাদেশ দলে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকেন সাব্বির। ম্যাচে গতিপথ পরিবর্তনে পুরো দেশ তাকিয়ে থাকে তার দিকে। ব্যাট হাতে তো বটেই, অ্যাক্রোবেটিক ফিল্ডার হিসেবেও অসাধারণ সাব্বির। ব্যাট হাতে অনেকবার দলকে উদ্ধার করেছেন তিনি। বিশেষ করে দল চাপে থাকলেও সাব্বিরের ব্যাট কথা বলে তলোয়ারের মতো। ঝড়ো ইনিংস খেলার পাশাপাশি ইনিংস লম্বা করতেও সমান কার্যকর সাব্বিরের ব্যাট। যদিও সাম্প্রতিক সময়টা ঠিক ভালো যাচ্ছে না মারকুটে এই ব্যাটসম্যানের। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও কথা বলেনি তার ব্যাট। তবে টাইগার তারকা জানালেন, রানখরার ওই স্মৃতিগুলো ভেতরে ভেতরে তাকেও বেশ পীড়া দেয়! ম্যাচ খেলে ভুলতে চান সেই দুঃস্মৃতি। সাব্বির বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচ বলে নয়। আমি আসলে খুব মরিয়া একটা ম্যাচ খেলার জন্য।’
আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে রানে থাকলেও, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গিয়ে হঠাৎ খেই হারিয়ে ফেললেন। অনেক সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছে সে সময়ে। তবে ব্যর্থতা মেনে নিয়ে ভবিষ্যতেই দৃষ্টি রাখছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিসিবিতে ফিটনেস ট্রেনিংয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে সাব্বির বলেন, ‘আমার জাতীয় দলের ক্যারিয়ার মাত্র তিন বছরের। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন-চারটা ম্যাচে ঠিকমতো খেলতে পারিনি। তার আগে দেশে, বাইরে বা বিশ্বকাপে মনে হয় ভালোই খেলেছি। ওই কয়েকটা ম্যাচ দিয়ে মনে হয় না কোনো খেলোয়াড়কে যাচাই-বাছাই করা যায়। এখান থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি কীভাবে ভুলগুলো শুধরে ওঠা যায়।’
কথা হয়েছে দলে তার পজিশন নিয়েও। এ বিষয়ে সাব্বির বলেন, ‘পজিশন সমস্যা না, সমস্যা হলো রান করতে পারিনি। রান করতে পারলে পাঁচ-ছয়-সাত-দশ, প্রশ্ন উঠত না। রানই বড় বিষয়। রান করতে পারলে তিন নম্বর ভালো, না করতে পারলে দশ নম্বর পজিশনও খারাপ! চেষ্টা করব যেকোনো পজিশনে ভালো খেলার।’
জাতীয় দলের আগামী মিশন সাদা পোশাকে। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে নায়ক হতে হতেও না হতে পারার এখনো স্পষ্ট। সামনেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই টেস্টের ঘরোয়া সিরিজ। সাব্বির মুখিয়ে আছেন খেলার জন্য। সেই সঙ্গে ফিরতে চান রানেও। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ব্যর্থতাকে আড়ালে ঠেলে দিতে দ্রুতই দারুণ কিছু করে দেখাতে চান। ব্যর্থতার ঘেরটোপে আর নিজেকে দেখতে চান না সাব্বির। এ নিয়ে সাব্বির বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচ বা অন্যকিছু। আমি আসলে একটা ম্যাচ খেলার জন্যই খুব মরিয়া হয়ে আছি। শেষ তিন-চারটা ম্যাচে ভালো করতে পারিনি। ওই স্মৃতি ভেতরে ভেতরে খোঁচা দেয়। সামনে টেস্ট, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি-যে সিরিজই হোক; সেখানে ভালো খেলে আগেরটা ভুলতে পারব।’
একদিকে ব্যাটে রান নেই। আরেকদিকে রঙিন পোশাকের পর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে সাদা পোশাকে নামবেন। টেস্টের প্রেসারটা একটু অন্য রকম। যদিও সব্বির নিজে তা ভাবেন না, ‘আসলে তিনটা ফরম্যাটেই চ্যালেঞ্জ। কোনো একটাকে অন্য রকম মনে করলে সেটা আবার বেশি চ্যালেঞ্জ মনে হবে। লাল বল বা সাদা বল, নিজের খেলাটা যদি খেলি, যদি বল বাছাই করে করে খেলতে পারি তাহলে সহজ হবে। সেরাটাই দিতে পারব।’
সেই ক্ষেত্রে ফিটনেস ক্যাম্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। জানালেন গতবারের লম্বা ক্যাম্পটা যেমন কাজে দিয়েছিল, এবারেরটাও তেমনই হবে, ‘গতবছর আমাদের একটা ফিটনেস টেস্ট হয়েছিল, যা আমাদের ১০-১১ মাস ফিট রাখে। প্রতিবছরই এক মাসের জন্য একটা ক্যাম্প হয়। এটা প্রায় এক বছর, পরবর্তী ৫-৬ সিরিজের জন্য আমাদের কাজে দেয়। এই ক্যাম্পটি আমদের জন্য বেশ কার্যকরী।’
তাই ফিটনেসে ঘাম ঝড়ানোতে আপাতত পূর্ণ মনোযোগ সাব্বিরের। পরে সেটা ব্যাট-বলের সাফল্যে রূপান্তর করতে প্রত্যয়ী তিনি। সেই সঙ্গে প্রত্যাশার চাপ তো আছেই। যদিও ওইভাবে ভাবেন না সাব্বির নিজেও, ‘আসলে ও রকম কিছু না, ক্রিকেটে চাপ এমন একটা ব্যাপার সেটা নিলেই এগোতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় কোনো বিষয় না। কোচ বা দল আমাকে যেভাবে খেলতে বলবে আমি সেভাবেই খেলব। খেলার ধরন বদলাব না।’
"