সাহিদ রহমান অরিন

  ১৫ নভেম্বর, ২০১৯

দেড়শতেই শেষ বাংলাদেশ

সকালের সূর্য দেখে নাকি বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে। ইন্দোরে এমনই এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক হলো বাংলাদেশের। মুদ্রা নিক্ষেপে বিরাট কোহলিকে হারিয়ে সাদা পোশাকে রঙিন অভিষেক হলো ‘অধিনায়ক’ মমিনুল হকেরও। তখন মনে হচ্ছিল, ইতিহাসের পাতায় দিনটা বোধহয় বাংলাদেশের নামেই লেখা থাকবে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের উদ্বোধনী দিনে টাইগারদের প্রাপ্তি বলতে ওটুকুই। আলো ঝলমলে দিনের বাকিটা আঁধারে ছেয়ে গেছে ইমরুল কায়েস-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের ব্যাটিং দৈন্যতায়।

টি-টোয়েন্টিতে মধ্যম সারির দল নিয়ে খেললেও টেস্টে পূর্ণ শক্তি নিয়ে নেমেছে ভারত। ক্রিকেটবোদ্ধারা আভাস দিয়ে রেখেছিলেন, স্বাগতিকদের এই বোলিং আক্রমণ সামলাতে হিমশিম খেতে হবে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বিরাট কোহলিও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পেসে মুশফিকুর রহিম-সাদমান ইসলামদের ঘায়েল করবে তার দল। আদতে হলোও তাই। ভারতের বৈচিত্র্যময় বোলিং লাইন আপের সামনে বাংলাদেশের ইনিংস তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। পরে বোলিং ও ফিল্ডিংয়েও যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যদের।

কাল ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে টেনেটুনে ১৫০ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। সেটাও রাহানে-কোহলিদের গুনে গুনে গোটা পাঁচেক ক্যাচ মিসের বদৌলতে। পরে ভারত ব্যাটিংয়ে নেমে ২৬ ওভারে ১ উইকেটে ৮৬ রান সংগ্রহ করে দিনের খেলা শেষ করেছে। প্রথম ইনিংসে টিম ইন্ডিয়ার লিড নিতে দরকার মাত্র ৬৫ রান। ব্যক্তিগত ৬ রানে আবু জায়েদ রাহির বলে টেস্ট উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন রোহিত শর্মা। আজ মায়াঙ্ক আগারওয়াল ৩৭ ও চেতেশ্বর পুজারা ৪৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের গোড়াপত্তন করবেন।

গতকাল ব্যাটিংয়ে নেমেই ভারতীয় পেসের ঝাঁজ টের পায় বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে নতশিরে ফেরেন ইমরুল (৬), সাদমান (৬) ও মিঠুন (১২)। এরপর একাধিক ‘জীবন’ পাওয়া মমিনুল-মুশফিকের জুটি চতুর্থ উইকেটে ৬৮ রান যোগ করে। তাতে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার স্বপ্ন বুনতে শুরু করে টাইগার সমর্থকরা। কিন্তু এই সেশনে বাঁধ সাধেন রবিচন্দ্রন আশ্বিন ও মোহাম্মদ শামি। ঘূর্ণি ও গতির যৌথ মিশ্রণে ৭ উইকেটে ১৪০ রান নিয়ে চা বিরতিতে যেতে হয় বাংলাদেশকে।

বিরতি থেকে ফিরে মাত্র ১০ রান তুলতেই বাকি ৩ উইকেট হারায় মমিনুল হকের দল। বাংলাদেশ শেষ ৫ উইকেট হারায় মাত্র ১০ রানে। ফলে ৫৮.৩ ওভারে ১৫০ রানে প্যাকেট হয় সফরকারীরা। ব্যাটিং পরামর্শক নিল ম্যাকেঞ্জির ১০ শিষ্যের সাতজনকেই শিকার করেছেন ভারতের পেসাররা। ফাস্ট বোলার শামি ৩টি এবং উমেশ ও ইশান্ত ২টি করে উইকেট নেন। জোড়া শিকার ধরেন স্পিনার আশ্বিনও। আর জাদেজার বুলেট থ্রোতে রান আউটে কাটা পড়েন তাইজুল। বাংলাদেশের এমন হাস্যকর ব্যাটিংয়ে অবশ্য হতাশার কিছু নেই। যে দল ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের মতো নবাগতর কাছে নাকানিচুবানি খায়, সে দল টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানধারী দলের বিরুদ্ধে তাদের মাটিতে নাস্তানাবুদ তো হবেই!

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close