ক্রীড়া ডেস্ক
হায় সালাহ হায় মিসর
কাঁধের চোটের কারণে বিশ্বকাপ স্বপ্নটা শেষ হতে বসেছিল মোহাম্মদ সালাহর। কিন্তু স্বপ্নের বিশ্বকাপটা রাঙিয়ে দেওয়ার আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন মিসরীয় ফারাও। মাঠে নামার জন্য দিন কাটিয়েছেন অধীর আগ্রহে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে দলের সঙ্গে থাকলেও সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়ায় কোনো ধরনের ঝুঁকি নেননি। সাইড বেঞ্চে বসে দেখেছিলেন উরুগুয়ের বিপক্ষে দলের লড়াকু পরাজয়। পরশু অবশ্য বসে থাকতে পারলেন না। দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডে তোলার স্বপ্ন নিয়ে ২৩ দিন পর মাঠে নেমেছিলেন মিসরের রাজা। কিন্তু ফেরার দিনটা স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না লিভারপুল ফরওয়ার্ড। সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক রাশিয়ার ১৫ মিনিটের ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল মিসর সা¤্রাজ্য। ৩-১ গোলে হারায় প্রথম রাউন্ড থেকে দেশে ফেরার টিকিট কেটে ফেলেছে হেক্টর কুপারের শিষ্যরা।
অন্যদিকে টানা দুই ম্যাচ জিতে প্রথম দল হিসেবে আসরের শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। প্রথম ম্যাচে স্তানিস্লাভ চেরচেশভের শিষ্যরা সৌদি আরবকে বিধ্বস্ত করেছিল ৫-০ গোলে। পরশু তাদের গতিময় ফুটবলের কাছে হার মানতে হয়েছে সালাহদেরও। মোট গোল সংখ্যাতেও ওপরের দিকে থাকছে স্বাগতিকরা। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে স্পেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে গোল করেছিল ৮টি। এবার দুই ম্যাচেই তা ছুঁয়ে ফেলেছে রাশানরা।
ভিডিও অ্যাসিসট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) ছাড়াও এবারের বিশ্বকাপে খুব আলোচ্য পড়েছে দুইটি বিষয়। আত্মঘাতী গোল ও পেনাল্টি। পরশু ১৭তম ম্যাচে এসেই পাঁচটি আত্মঘাতী গোল ও ১০টি পেনাল্টির দেখা পেল রাশিয়া বিশ্বকাপ। সর্বোচ্চ ৫টি আত্মঘাতী গোলের দেখা পাওয়া গিয়েছিল ১৯৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে।
প্রথমার্ধে গতিময় ফুটবল খেলা দুই দল বিরতিতে যায় গোলশূন্য থেকে। তবে ফিরে এসেই উজ্জীবিত রাশিয়া মরিয়া হয়ে আক্রমণ চালাতে থাকে মিসরের শিবিরে। সুবিধাটা আদায় করে নিতে বেশিক্ষণ সময়ও লাগেনি তাদের। ৪৭ মিনিটের সময় ডি বক্সের ভেতর ভুল করে বসেন আহমেদ ফাথি। মিসরের এই রাইটব্যাকের ভুলের কারণে এক গোলে এগিয়ে থেকে ম্যাচটা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় রাশিয়া। গোল শোধে মরিয়া মিসরকে ৫৯ মিনিটে দ্বিতীয় ধাক্কাটা দেন ডেনিস চেরিশেভ। ধাক্কাটা সামলে উঠতে না উঠতেই ৬২ মিনিটের সময় ব্যবধানটা আরেকবার বাড়িয়ে দেন রাশান স্ট্রাইকার আর্তেম জিউবা। উদ্বোধনী ম্যাচেও এই দুই খেলোয়াড় গোল করেছিলেন। রাশিয়ার আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত থাকা মিসর ব্যবধান কমানোর সুযোগটা পায় ৭৩ মিনিটে। পেনাল্টি থেকে একটি গোল শোধ করেন সালাহ। বিশ্বকাপে মিসর শেষ গোল পেয়েছিল ১৯৯০ সালে। নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে গোলটি করেছিলেন মাজদি আবদেলগানি। ২৮ বছর পর এবার মিসরের হয়ে প্রথম গোলটি পেলেন সালাহ।
ম্যাচ শেষে মিসর কোচ কুপার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পরাজয়ে আমরা হতাশ। তবে আমাদের দলটি ভালোই প্রতিরোধ করেছে। কিন্তু ১০ থেকে ১৫ মিনিট আমরা ম্যাচে ছিলাম না। আর তাতেই আমরা ছিটকে গেছি। বিশ্বকাপে এই রকম ভুল হলে আর ফেরার পথ থাকে না। ’
বিশ্বকাপে মিসর তাদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে ২৫ জুন সৌদি আরবের বিপক্ষে। অন্যদিকে একই দিনে সামারা অ্যারেনায় রাশিয়ার প্রতিপক্ষ দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে।
এক নজরে ফলাফল
পোল্যান্ড ১-২ সেনেগাল
রাশিয়া ১-২ মিসর
পর্তুগাল ১-০ মরক্কো
"