ক্রীড়া ডেস্ক
সাংবাদিকদের কোহলির তোপ!
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারের পর এমনিতেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বিরাট কোহলি। তার ওপর সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে আউট হয়ে ফেরার পথে লুঙ্গি এনগিডির দিকে আগুনচোখে তাকানো এবং আম্পায়ারের সঙ্গে বাদানুবাদ করে ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা গুনেছেন। ফলে ম্যাচে শেষে সমালোচক ও সাংবাদিকদের ছোঁড়া তীরে বিদ্ধ হয়েছিলেন ভারতের সর্বাধিনায়ক। একের পর এক প্রশ্ন যেন কাটা ঘায়ে নুন ছিটে দেওয়ার মতো যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠেছিল তার জন্য। তবে এবার সাংবাদিকদের এক হাত নিলেন মিস্টার চিকু। গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে ২৯ বছর বয়সী রান মেশিনকে দেখে মনে হচ্ছিল ভয়ানক আগ্নেয়গিরি। ৭৯ খ্রিস্টাব্দে রোমান নগরী পম্পেইকে গ্রাস করা ভিসুভিয়াসের লাভাস্রোত বয়ে গেল গণমাধ্যমের ওপর দিয়ে।
২৫ বছরের বদলা নিতে এসে দক্ষিণ আফ্রিকায় রীতিমতো নাকানি-চুবানি খেয়েছে ভারত। সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নগুলোও তাই একটু বেশিই ঝাঁজালো হয়ে আসছিল কোহলির দিকে। তবে এবার আর মাথা ঠা-া রাখেননি তিনি। জি নিউজের এক সাংবাদিক একাদশ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই তাকে বাউন্ডারির বাইরে আঁছড়ে ফেলেন, ‘সেরা একাদশ কোনটি? আমরা জিতলেই কি সেরা একাদশ হয়ে যেত এই দলটা? ম্যাচের ফল দিয়ে আমরা সেরা একাদশ নির্বাচন করি না।’ চড়াও হয়ে আরো বলেন, ‘আপনি বলছেন, আমরা সেরা একাদশ খেলাতে পারতাম। তাহলে আপনিই বলে দিন কোনটা সেরা একাদশ, আমরা সেটাই খেলব।’
অজিঙ্কা রাহানেকে বাইরে রেখে রোহিত শর্মার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সমালোচনা চলছিল সিরিজের প্রথম টেস্ট থেকেই। কোহলি অবশ্য জোরালোভাবে সমর্থন করছেন এই দলটিকেই, ‘একটা ম্যাচ খারাপ খেললেই কাউকে আমরা বলতে পারি না, সে এই পর্যায়ে খেলার উপযুক্ত না। এমন তো নয় যে, সেরা একাদশ নিয়েও আমরা ঘরের মাঠে হারিনি।’ আম্পায়ার মিশেল গফের সঙ্গে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের কারণে ম্যাচ ফির ২৫ শতাংশ জরিমানা গুনতে হয়েছে কোহলিকে। কাজে আসেনি তার ১৫৩ রানের লড়াকু ইনিংসটাও। পরিস্থিতির বিচারে দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত কোহলি যেন বিধ্বস্ত আর পরাজিত এক সেনাপতিই।
নেতৃত্বে আসার পর একাদশে পরিবর্তনই যেন একমাত্র ‘অপরিবর্তনীয়’ ঘটনা। ঘন ঘন বদলের কারণেই কি ডি ভিলিয়ার্স-ডু প্লেসিদের বিপক্ষে নতজানু পারফরম্যান্স? এমন প্রশ্নে আবারও ক্ষুব্ধ কোহলি। উত্তর দিতে গিয়ে তার অধীনে ভারতের জয়-পরাজয়ের খতিয়ানটাও দিয়ে দিলেন, ‘আমার নেতৃত্বে ৩৪ ম্যাচে কয়টি জিতেছে ভারত? বলুন কয়টি? ২১টি (আসলে ২০ টি), আর হার? ড্র? জিতলেই পিঠ চাপড়ে দেবেন, হারলেই তীর ছুঁড়বেন এটা কেমন কথা? আমরা যেখানেই খেলি, সামর্থ্যরে সবটুকু উজাড় করে দিতে চেষ্টা করি। দেখুন, আমি এখানে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে এসেছি, লড়াই করতে নয়।’ নিজেদের কি বিশ্বসেরা ভাবার সাহস এখনো আছে ভারতের? এনডি টিভির সাংবাদিকের কাছ থেকে ছুটে এল এমন প্রশ্নও। টিম ইন্ডিয়ার কাপ্তানের জবাব, ‘আচ্ছা, একটা সিরিজ হারলেই কি সেই দল তার শ্রেষ্ঠত্ব হারায়? ভারতের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থাটা কী হয়, একবার ভাবুন তো।’ তবে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর চটলেও একটা সময় নিজের ক্রোধের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনেন কোহলি। টেস্ট থেকে শিক্ষা নিয়ে সীমিত ওভারের সিরিজে ভারত ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
"