পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ১২ আগস্ট, ২০২০

পৈতৃক সম্পত্তিতে ভারতে মেয়েরও সমান অধিকার

ভারত যখন করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত, এমন একসময়ে ঐতিহাসিক রায় দিলেন সুপ্রিম কোর্ট। হিন্দু-আনডিভাইডেড ফ্যামিলি প্রপার্টিতে মেয়েদের পক্ষে রায় দিয়েছেন দেশের শীর্ষ আদালত। এই রায় অনুযায়ী, পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার রয়েছে মেয়েদেরও, এমনই জানিয়ে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় দেন। এই রায় অনুযায়ী, ২০০৫ সালের আগে অর্থাৎ হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সংশোধনী কার্যকর হওয়ার আগেও যদি কারো বাবা মারা গিয়ে থাকেন, তাহলেও তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারেন সেই ব্যক্তির মেয়েরা। রায় দেওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেন, কন্যা সন্তান চিরকালই প্রিয় কন্যা সন্তান হয়েই থাকেন। মহিলার জন্ম যবেই হয়ে থাক ২০০৫ সালের সংশোধিত এই আইন অনুযায়ী সব মহিলার বাবার সম্পত্তি হিন্দু আইন অনুযায়ী অধিকার সমান। মঙ্গলবারের রায়ে একদম স্পষ্ট করেই জানানো হয়েছে, হিন্দু-সাকসেশন অ্যাক্ট সংশোধন হওয়ার পরে মেয়েদের এই আইনি অধিকার নিশ্চিত রয়েছে। তবে সংশোধনের সময় বাবা বেঁচে থাকলে বা না থাকলেও সব মেয়েরই এই সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।

আসলে ২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সংশোধনী কার্যকর হওয়ার আগে যাদের বাবা-মা মারা গেছেন, তারাও কি পৈতৃক সম্পত্তিতে সমান অধিকার পাবেন, এই নিয়ে একাধিক মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। ২০১৬ সালে প্রকাশ বনাম ফুলবতী মামলা এই আইন কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছিলেন আদালত। আবার ২০১৮ সালের অন্য আরেকটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই আইন কার্যকর হবে বলে জানান সুপ্রিম কোর্ট। ফলে বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট কোনো দিশা ছিল না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০০৫ সালে হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী পৈতৃক সম্পত্তিতে মেয়েদের সমানাধিকার আছে। এ দিন রায় দিয়ে বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেন, একটা মেয়েই সারাজীবন বাবা-মায়ের আদরের মেয়ে হয়ে থাকেন। কিন্তু সম্পত্তির মালিক বেঁচে থাকুক আর না থাকুক, সেই সম্পত্তির ওপর মেয়ের সারা জীবন অধিকার থাকবেই। শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছেন যেহেতু শীর্ষ আদালত এই সংক্রান্ত বিভ্রান্তি কাটিয়ে দিল আজকের রায়ের মাধ্যমে, তাই সারা দেশে কন্যা সন্তানের আইনি উত্তরাধিকার সংক্রান্ত যেসব মামলা রয়েছে, সেগুলোর যেন দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close