নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ অক্টোবর, ২০১৯

ফুটবলের উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা ফিফার

বাংলাদেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ উন্নতি দেখছেন ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। গতকাল সকালে ঢাকায় পৌঁছার পর ফিফা সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে তার কার্যালয়ে যান। সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনি (ফিফা সভাপতি) বলেছেন, বাংলাদেশের ফুটবল উদীয়মান অবস্থায় আছে।’ আলোচনায় গত মঙ্গলবার কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারতে ফুটবল ম্যাচের প্রসঙ্গও এসেছে বলে জানান প্রেস সচিব।

মঙ্গলবার কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ সালের এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে ‘ই’ গ্রুপে দুই দলের ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে। বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে টানা দুই হারের পর সেটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম ড্র। ভারতের বিপক্ষে এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচ ড্র করে বাংলাদেশ।

ইহসানুল করিম বলেন, ফিফা সভাপতি বলেছেন ফুটবল থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে, বিশেষ করে শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার মতো বিষয়গুলো। বাংলাদেশে ফুটবল খেলার উন্নয়নে সরকারে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরলে ফিফা সভাপতি সেই সবের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশে ফুটবলের উন্নয়নে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান সমর্থন অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। ফুটবল যে বাংলাদেশে জনপ্রিয় খেলা তা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। নিজের দাদা ও বাবা ফুটবল খেলতেন সে কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার ভাই শেখ কামালের ক্রীড়া সংগঠনের নৈপুণ্য আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠা করার কথাও উল্লেখ করেন।

ফিফা সভাপতিকে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে নতুন খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যই এ প্রতিযোগিতার আয়োজন হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আরো বেশি বেশি ছেলেমেয়েদের ফুটবলের মতো জনপ্রিয় খেলায় আসতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে ফিফার জার্সি উপহার দেন ইনফান্তিনো। অন্যদিকে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার প্রধানকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি প্রদান করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আইন প্রয়োগে কঠোর হোন : ইউজিসিকে প্রধানমন্ত্রী

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে সুশাসন ফেরাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) আইন প্রয়োগে কঠোর হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা আইনের বাইরে যাবেন না, একেবারে কঠোরভাবে এটা প্রয়োগ করবেন। নতুন আইন করে ইউজিসির ক্ষমতা ও সক্ষমতা আরো বাড়ানোর কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। ইহসানুল করিম বলেন, আইন শক্তভাবেই অনুসরণ করা হচ্ছে জানিয়ে ‘আইনের বাইরে গেলে কাউকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না’ বলে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মান নিয়ে প্রশ্ন ছাড়াও শিক্ষকসহ কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনিয়মের সাম্প্রতিক ঘটনা তার নজির।

ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনিয়মের জন্য নজরদারিতে রাখা হয়েছে। গত আগস্টে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে ওইসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করে ইউজিসি। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া, উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মানোন্নয়ন, উদ্ভাবনী গবেষণা ও উন্নয়নকে উৎসাহিত করা ও সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশাসনের উন্নয়ন ঘটানো ইউজিসির দায়িত্ব। এছাড়াও উচ্চশিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন ও সেই বিষয়ে সরকারকে পরামর্শও দেওয়ার কাজটি ইউজিসির করার কথা।

অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, কমিশন একটি গবেষণা নীতিমালা তৈরি করেছে। শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পিএটিসির মতো একটি একাডেমি চান। দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে এখন ১৫৫টির মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে উল্লেখ করে ইউজিসি চেয়ারম্যান ইউজিসির জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, কার্যালয় সচিব সাজ্জাদুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সফররত ইতালি বিমানবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আলবার্টো রোসো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ইতালিতে বাংলাদেশের বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানান প্রেস সচিব ইহসানুল করিম

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close