প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৩ জুলাই, ২০১৯

আরো দুই দিন বর্ষণ, তারপর কমবে বৃষ্টি

আষাঢ়ের শুরুতে বর্ষার রূপ ছিল গ্রীষ্মের মতো। দাবদাহের প্রভাবে অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে জনজীবন। কিন্তু আষাঢ়ের বিদায়বেলায় চিরচেনা রূপ ধারণ করেছে বর্ষাকাল। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় কয়েক দিন আগে ভারী বৃষ্টি শুরু হয় চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে। এখন এই বৃষ্টি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত সোয়া দুই ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী তিন দিনে বৃষ্টিপাতের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তবে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে যানজটের কবল থেকে মুক্ত ছিল নগরবাসী। আবহাওয়া অধিদফতর এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী দুই দিন ভারী বৃষ্টি চলবে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাঙ্গামাটিতে ১৬৫, হাতিয়ায় ১৩৫, সীতাকুন্ডে ১২৯, টাঙ্গাইলে ১২২, কুতুবদিয়ায় ১১১, সন্দ্বীপে ১০১ এবং চট্টগ্রামে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিন্তু সকালের পর দফায় দফায় বৃষ্টি হতে থাকে দেশজুড়ে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর ১২টার পর বৃষ্টির দাপট বাড়তে থাকে দেশের মধ্যাঞ্চলে। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১২টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত ৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়।

গতকাল সকাল ৯টায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় গতকাল রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ৪৮ ঘণ্টায় যমুনা নদীর জামালপুর জেলায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের সুরমা, কুশিয়ারা, কংস, সোমেশ্বরী, ফেনী, সাঙ্গু, মাতামুহুরি, হালদাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close