নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ জুলাই, ২০১৮

প্রথম চুক্তি সই

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক ব্যবহার সেপ্টেম্বরে

বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর বাণিজ্যিক কার্যক্রম সেপ্টেম্বরের মধ্যে শুরু করা যাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। স্যাটেলাইটটি নির্বিঘেœ মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সংকেত দেওয়া-নেওয়াসহ সার্বক্ষণিকভাবে গতিবিধি ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ তথ্য জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ প্রকল্পের পরিচালক মো. মেসবাহুজ্জামান। এদিকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহারের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রথম চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল)। গতকাল রোববার বিকেলে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ চুক্তি সই হয়। নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উপস্থিতিতে চুক্তিতে সই করেন নৌ-মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সামাদ এবং বিসিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে শাজাহান খান বলেন, ‘এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর বলা হয়েছিল এটা দেশের কোনো কাজে আসবে না। আবার বলা হয়েছিল, এটার মাধ্যমে টাকা পাচার করা হয়েছে, টাকা নষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু আজ এই চুক্তির মাধ্যমে বিনিয়োগের টাকা ফেরত আসার পথ চালু হলো। আমার জানা মতে আট বছরে এই স্যাটেলাইটের বিনিয়োগের টাকা উঠে আসবে।’

মো. মেসবাহুজ্জামান বলেন, ‘এখনো ফুল সিস্টেমটিকে টেস্ট করা হচ্ছে, আমরা যেভাবে চাচ্ছি, সেভাবে ওটা ফাংশনাল কিনা তা দেখা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। এভাবে ফুল টেস্ট শেষ করতে হয়তো সেপ্টেম্বর লেগে যাবে। তারপর আমরা কমার্শিয়াল অপারেশনে যাব।’

ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স-ইতালি থেকে স্যাটেলাইটটি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলেও এখন গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে ‘ট্র্যাকিং এবং কন্ট্রোলিং’ করা হচ্ছে বলে জানান প্রকল্প কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ট্র্যাকিংয়ের আন্ডারে অনেক অ্যানালাইসিস আছে। কন্ট্রোলিংয়ের সঙ্গেও অনেক বিষয় আছে। স্যাটেলাইট সিগন্যাল যেটা পাঠায় ওটা আমরা রিসিভ করি। ওই সিগন্যাল দিয়ে আমরা তা চেক করি। পরে ওই সিগন্যালের ওপর বেসিস করে আবার সিগন্যাল পাঠিয়ে স্যাটেলাইটটিকে কন্ট্রোল করা হয়। আদান-প্রদানের প্রক্রিয়ায় সিগন্যালের ক্ষমতা অক্ষুণœ থাকছে কি না, তা পরীক্ষা করতে ফ্রিকোয়েন্সি অ্যানালাইজার ও স্পেকট্রাম অ্যানালাইজারসহ বিভিন্ন জটিল ইকুপমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এ পরীক্ষা করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পার্থক্য পাওয়া যায়নি। যে পরিমাণ সিগন্যাল পাঠানো হয়েছে, সেই পরিমাণ সিগন্যালই ফেরত পাওয়া গেছে।’

গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশনে ৩০ জন বাংলাদেশি ও ১০ জন ফরাসি প্রকৌশলী সার্বক্ষণিক কাজ করছে। গ্রাউন্ড স্টেশনের কনসালট্যান্ট এস এম নুসরাত দস্তগীর বলেন, এই কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিভিশন, ইন্টারনেট, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা পাওয়া যাবে। যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।

এ ছাড়াও এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্বাভাস, টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-রিসার্চ, ভিডিও কনফারেন্স প্রতিরক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে।

দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্যাটেলাইট ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এজন্য বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালুর ফলে অনেকাংশেই কমে আসবে এ ব্যয়। একই সঙ্গে দেশের টাকা থেকে যাবে দেশেই; আয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।

এ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে নেপাল, মিয়ানমার, ভুটান ও অন্য দেশের কাছে সেবা ভাড়া দিতে পারবে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করা যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist