ক্রীড়া ডেস্ক

  ০৪ জুন, ২০১৮

সেই রশিদেই কুপোকাত

লক্ষ্যটা ১৬৮ রানের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য লক্ষ্যমাত্রাটা সহজ নয়। দেরাদুনের মন্থর গতির উইকেট বিবেচনায় আফগানিস্তানের ছুড়ে দেওয়া স্কোরটা বাংলাদেশের জন্য হয়ে উঠেছিল পাহাড়সম। সেটা ডিঙাতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। জয় তো দূরের পথ, আফগানদের সঙ্গে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতাটুকু করতে পারেনি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। রশিদ-নবি-স্ট্যানিকজাইদের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেন সাকিব-তামিম-মাহমুদউল্লাহরা।

কঠিন লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সাকিবরা নির্ধারিত কুড়ি ওভারও খেলতে পারেননি। আফগান তোপে বাংলাদেশের পথচলা থেমে গেছে ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতেই টাইগাররা গুটিয়ে গেছে ১২২ রানে। ৪৫ রানের বিশাল হার দিয়েই শুরু হলো বাংলাদেশের আফগানিস্তান মিশন। আগামীকাল একই মঞ্চে দ্বিতীয় ম্যাচে ফের আফগানদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। ভারতের ২১তম ভেন্যু হিসেবে কাল আর্ন্তজাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মঞ্চায়ন হলো রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে। কিন্তু অভিষেক ম্যাচেই দেরাদুনের ভেন্যুটা উপহার দিল নিষ্প্রাণ এক লড়াই। আফগানিস্তানের একচ্ছত্র আধিপত্যের সামনে গুঁড়িয়ে গেল বাংলাদেশ। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে টাইগারদের ব্যাটিং অর্ডার। শাপুর জাদ্রান, মোহাম্মদ নবি এবং রশিদ খানের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। শেষেরজনের কাছেই মূলত ধরাশায়ী হয়েছে বাংলাদেশ। ৩ ওভারে ১৩ রানের বিনিময়ে রশিদ শিকারে পরিণত করেছেন মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। দুর্দান্ত স্পিন-জাদুর সুবাদে অবধারিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন রশিদ। সিরিজ শুরুর আগে টি-টোয়েন্টির শীর্ষ এই বোলারকে নিয়েই যত ভয় ছিল বাংলাদেশের। ভয়টা যে একেবারেই অমূলক ছিল না, সেটা প্রথম ম্যাচেই বুঝিয়ে দিয়েছেন রশিদ। ধস নামিয়েছেন বাংলাদেশের মিডল অর্ডারে। রশিদ-আঘাত না আসলে ম্যাচটিতে অন্তত কিছুটা লড়াই করতে পারত টাইগাররা।

শুধু রশিদ নয়, আফগান দুই স্পিনার মুজিব উর রহমান এবং মোহাম্মদ নবিও ছিলেন দুর্দান্ত। তাদের ঘূর্ণির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন তামিম ইকবাল, লিটন দাশ, সাকিব আল হাসানও। শেষের দুজন নবির ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে ফিরেছেন সাজঘরে। ২০ বলে ৩০ রান করা লিটন তো স্রেফ আত্মহত্যা করেছেন অনর্থক রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে। তবে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসার পথটা প্রথম দেখিয়ে গেছেন ওপেনার তামিম। নিজের প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরে যান তিনি। ২১ রানে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রস্থান হয় সাকিবের (১৫ বলে ১৫)।

বাংলাদেশের পক্ষে লিটনই দলীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন। দ্বিতীয় সেরা ইনিংসটা এসেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। ২৫ বলে ২৯ রানের ইনিংসে টাইগারদের শেষ আশাটা দেখিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জাদ্রানের বলে উসমান গনির হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ। ১১৮ রানে বাংলাদেশের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার আগেই মুশফিক ফিরেছেন ১৭ বলে কুড়ি রান করে।

আফগান পেসার জাদ্রান উইকেট নিয়েছেন আরো দুটি। আবুল হাসান (৫) ও রুবেল হোসেনকে (০) সাজঘরে পাঠিয়ে স্বাগকিদের জয়ের পথটা মসৃণ করে দেন জাদ্রান। তবে অল আউট হওয়া পেছনে যতটা না প্রতিপক্ষ বোলারদের অবদান আছে, তারচেয়েও বেশি ‘কৃতিত্ব’ প্রাপ্য বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের।

এর আগে দেরাদুনে টস জিতে সতীর্থ আবু জায়েদ রাহির হাতে বল তুলে দেন টাইগার দলপতি সাকিব। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে শুরুতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। ৮.২ ওভারে বিনা উইকেটে ৬২ রান তুলে ফেলেছিল আফগানিস্তান। সেখান থেকেই আফগানদের চেপে ধরা শুরু করে টাইগাররা। তাদের দলীয় সংগ্রহ ১৩৫ রানের মধ্যে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ শফিকুল্লাহ শফিক ও সামিউল্লাহ সেনওয়ারির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে আফগানদের শক্তিশালী সংগ্রহে পৌঁছে দেন।

ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ দলীয় সর্বোচ্চ ৩৭ বলে ৪০ রান করেন। শেষ দিকে ১৮ বলে ৩৮ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন সেনওয়ারি। এ ছাড়া শফিক ৮ বলে ২৪ রানের ঝড় তুলেন শফিক। আফগানদের শক্তিশালী সংগ্রহে অবদান ছিল উসমান গনি, অধিনায়ক আসগর স্ট্যানিকজাইয়েরও। উসমান ২৪ বলে ২৬ রান করেছে। স্ট্যানিকজাই ২৪ বলে ২৫ রান করেন।

বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আবুল হাসান রাজু ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষের জন এক ওভারে এক রান দিয়ে দুটি শিকার করেন। এ ছাড়া রুবেল হোসেন, সাকিব ও আবু জায়েদ একটি করে উইকেট ঝুলিতে পুরে নেন।

আফগানিস্তান : ১৬৭/৮

বাংলাদেশ : ১২২/১০

ফল : আফগানিস্তান ৪৫ রানে জয়ী

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist