আদালত প্রতিবেদক

  ২৮ মে, ২০১৮

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট

পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চ এ রুল দেয়।

গত ২৩ মে ক্যাবের ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন এ রিট আবেদন করেন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

চার সপ্তাহের মধ্যে বিইআরসি, বিইআরসির চেয়ারম্যান এবং বিদ্যুৎ ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

গত বছর ২৩ নভেম্বর প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ায় বাংলাদেশ অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। নতুন হারে আবাসিকে মাসে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়বে ১৫ টাকা, ১৫০ ইউনিটে ৪৮ টাকা, ২৫০ ইউনিট পর্যন্ত ৯০ টাকা, ৪৫০ ইউনিট পর্যন্ত ১৯৬ টাকা এবং ১০০০ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়বে ৬০৪ টাকা।

তবে ন্যূনতম বিল তুলে দেওয়ায় কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের খরচ কমবে। ১৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের খরচ বাঁচবে ১৭ থেকে ২২ টাকা।

বিইআরসির ঘোষণা অনুযায়ী দাম বাড়ানো হয়েছে কেবল খুচরা পর্যায়ে; পাইকারিতে বিতরণ কেন্দ্রগুলোর জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না।

আদালত রুল জারির পর জ্যোর্তিময় বড়ুয়া পরে সাংবাদিকদের বলেন, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিইআরসি গণশুনানি করে। আইন অনুযায়ী শুনানি করার ৯০ দিনের মধ্যে একটি লিখিত আদেশ দেওয়ার কথা।

‘কিন্তু সে রকম কোনো আদেশ না দিয়ে ২৩ নভেম্বর পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়। বিইআরসির ওই সিদ্ধান্ত আইন অনুযায়ী না হওয়ায় তা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। আদালত প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছে।’

সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিদ্যুতের দাম গড়ে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বাড়িয়েছিল সরকার। তাতে মাসে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়ে ২০ টাকা; ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারে খরচ বাড়ে কমপক্ষে ৩০ টাকা। চলতি বছর মার্চে বিভিন্ন খাতে গ্যাসের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পর জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছিলেন, বিদ্যুৎ খাতে গ্যাসের দাম বাড়ায় বিদ্যুতের দামও সমন্বয় করা প্রয়োজন।

এরপর এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে শুনানির আয়োজন করে। সেখানে পাইকারিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রায় ১৫ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ৬ থেকে সাড়ে ১৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব আসে।

এর মধ্যে ডিপিডিসি গ্রাহক পর্যায়ে ৬.২৪ শতাংশ, ডেসকো ৬.৩৪ শতাংশ, ওজোপাডিকো ১০.৩৬ শতাংশ, আরইবি ১০.৭৫ শতাংশ এবং পিডিবি ১৪.৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। নিয়ম অনুযায়ী, গণশুনানি করার পর ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনের সিদ্ধান্ত জানাতে হয়।

এবার বিতরণ সংস্থাগুলোর দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগে কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাব) পক্ষ থেকে আনা দাম কমানোর একটি প্রস্তাব নিয়েও শুনানি হয়। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নিয়ে বিইআরসির জারি করা আদেশে ‘অন্যায় ও অযৌক্তিক’ কারণ দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম। ক্যাব বলছে, বিইআরসির গণশুনানিতে তারা দাম কমানো যে সম্ভব তা যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist