বিনোদন প্রতিবেদক

  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

নায়করাজকে উৎসর্গ করে বাংলোর নামকরণ

নায়ক শব্দটি উচ্চারণ করতেই যার চেহারা আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে তিনি আর কেউ নন, আমাদের প্রিয় নায়করাজ রাজ্জাক। হঠাৎ করেই যখন তিনি আমাদের ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমান। সে সময় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেক সংগঠন নায়করাজের নামকরণ করে অনেক কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সড়ক কিংবা বিএফডিসির কোনো একটি ফ্লোরের নামকরণ করা। আবার কেউ কেউ তার চেয়েও বেশি কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও নায়করাজকে ঘিরে কিছুই করা হয়নি। অবশ্য তাতে তার পরিবার কোনো রকম মনঃক্ষুণœ হয়নি। কারণ জীবদ্দশাতেই নায়করাজের পরিবারকে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। আর মরণের পর কী হবে না হবে, তা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন নায়করাজের পরিবার।

তবে একুশে ফেব্রুয়ারিতে নায়করাজের স্ত্রী ও তার বড় ছেলে বাপ্পারাজ শ্রীমঙ্গলের রাধানগরে গিয়েছিলেন ‘হারমিটেজ গেস্টহাউস’-এ। সেখানে গিয়ে তারা বিস্মিতই হলেন। কারণ, গেস্টহাউসটির কর্ণধার আইনজীবী সুলতানা ফাইজুন্নাহার ছয় মাস আগে নির্মিত নতুন বাংলোটি নায়করাজ রাজ্জাককে উৎসর্গ করেন। উৎসর্গপত্রে লেখা আছে, ‘নায়করাজ রাজ্জাক স্মরণে-যিনি এই পর্ণকুটিরে একাধিকবার পদধূলি দিয়েছেন’। নিজের বাবার নামে বাংলো উৎসর্গ দেখে অনেকটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন বাপ্পারাজ। বিষয়টি নিয়ে তিনি এতটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন যে, বারবার চোখের জল ফেলছিলেন। বাপ্পারাজ বলেন, ‘আমি, আমার পরিবার শ্রদ্ধেয় সুলতানা ফাইজুন্নাহার আন্টির কাছে ভীষণ কৃতজ্ঞ। আমরা এমনিতেই কদিনের জন্য সেখানে বেড়াতে গিয়েছি। কিন্তু সেখানে গিয়ে এতটা ভালোবাসা আর মায়ার জালে জড়াব, ভাবতেও পারিনি। আব্বা চলে যাওয়ার পর অনেকেই অনেক কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বুঝতে পেরেছিলাম, কিছুই হবে না। দিন যাচ্ছে সময় যাচ্ছে। আমার সেই ধারণা সত্যি হচ্ছে। কিন্তু আমার সেই ধারণা, একজন সাধারণ মানুষের কাছে মিথ্যে হয়ে গেল। আমরা ফাইজুন্নাহার আন্টির ভালোবাসার কাছে হেরে গেলাম, ঋণি হয়ে গেলাম তার কাছে। আব্বার প্রতি তার শ্রদ্ধা ভালোবাসা দেখে সত্যিই চোখে পানি চলে আসছিল বারবার। আম্মাও আবেগাপ্লুত হয়ে উঠেন।’ সুলতানা ফাইজুন্নাহার বলেন, ‘আমার প্রিয় নায়ক নায়করাজ রাজ্জাক। পেশায় আমি একজন আইনজীবী হলেও বেশ কয়েক বছর ধরে আমি এই গেস্টহাউস নিয়েই ব্যস্ত। সর্বশেষ যখন আমার প্রিয় নায়ক এখানে এসেছিলেন, তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন যে, তিনি আবার আসবেন। কিন্তু আর তার আসা হলো না। তখন আমি খুব কষ্ট পাই। তাকে মনের মতো করে রান্না করে খাওয়াতে পারিনি, ঠিকমতো সময় দিতে পারিনি। আমার ভেতর হতাশা কাজ করছিল। তাই একসময় তার প্রতি ভীষণ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থেকেই নতুন বাংলোটি আমি তাকে উৎসর্গ করি। আমি আমার নিজের মনের শান্তির জন্যই এটি করেছি। আল্লাহ নায়করাজকে বেহেশত নসিব করুন।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close