বিনোদন প্রতিবেদক

  ১৯ অক্টোবর, ২০১৮

আইয়ুব বাচ্চুর হৃদয়ছোঁয়া যত গান

বাংলাদেশের ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু। চার দশকেরও বেশি সময় তিনি নিজেকে বিলীন করে দিয়েছিলেন সুর ও সংগীতে। তার ‘রূপালি গিটারে’ বুঁদ হয়নি এমন শ্রোতা মেলা ভার। কিন্তু সুরের মায়াজাল ছিন্ন করে চলে গেছেন তিনি। তবে শারীরিকভাবে তার আর দেখা না মিললেও তিনি থাকবেন বাংলা ব্যান্ড সংগীতপ্রিয় অগণিত শ্রোতাদের হৃদয়ে হৃদয়ে। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন রূপালী গিটারের এই মহান শিল্পী। তার মৃত্যুতে বাংলা ব্যান্ড সংগীত হারালো হৃদয়ছোঁয়া সুরের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটি।

১৯৬২ সালে জন্ম নেওয়া চট্টগ্রামের সন্তান আইয়ুব বাচ্চু উপমহাদেশের একজন সেরা গিটারিস্ট হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। ১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডদলের সঙ্গে আইয়ুব বাচ্চু সংগীত জীবনের যাত্রা শুরু করেন। ‘হারানো বিকেলের গল্প’ নামের গানে প্রথম কণ্ঠ দেন তিনি। পরে ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এক দশক ‘সোলস’ ব্যান্ডের হয়ে গান করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ তার প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। এরপর ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’। এই তার সংগীত জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এর পরের ইতিহাস সবারই জানা। একে একে সুপারহিট সব গান উপহার দিয়ে গেছেন এই কিংবদন্তি শিল্পী।

প্রথমেই আসা যাক ‘চলো বদলে যাই’ শিরোনামের গানটির কথায়। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত ‘সুখ’ অ্যালবামের এই গানটি আইয়ুব বাচ্চুর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান হিসেবে বিবেচিত। এরপর ‘এই রুপালি গিটার ফেলে একদিন চলে যাব দূরে বহুদূরে।’ গানটিতে গিটারের প্রতি আইয়ুব বাচ্চুর ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। ‘রূপালি গিটার’ শিরোনামের এই গানটিও শিল্পীর ‘সুখ’ অ্যালবামের। এটিও এই শিল্পীর গাওয়া সর্বাধিক জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১৯৯৫ সালে বের হয় আইয়ুব বাচ্চুর তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। সর্বকালের সেরা একক অ্যালবামের একটি বলে অবিহিত করা হয় এটিকে। কারণ এই অ্যালবামের প্রায় সবগুলো গানই তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। বিশেষ করে ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘অবাক হৃদয়’, এবং ‘আমিও মানুষ’ শিরোনামের গানগুলো এখনো দেশের সব গানপ্রেমীদের মনে মনে গুঞ্জরণ তুলে। এ ছাড়া বিভিন্ন অ্যালবামে গাওয়া ‘মেয়ে তুমি কি দুঃখ চেনো’, ‘আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি’, ‘পত্রমিতা বন্ধু তোমায় বেসেছি যে ভালো’, ‘এক আকাশের তারা তুই একা গুনিস নে’ ‘আর বেশি কাঁদালে উড়াল দেব আকাশে’, ‘চোখ বুজিলে হবে অন্ধকার’, ‘সাক্ষী থাকুক বিশাল আকাশ’, গানগুলোও যেকোনো লাইভ অনুষ্ঠান ও কনসার্টে ঝড় তোলার পক্ষে যথেষ্ট।

বাংলা চলচ্চিত্রেও আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয় গানের সংখ্যা কম নয়। সিনেমার জন্য তিনি প্রথম গান গেয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে। ওই বছর কাজী হায়াত পরিচালিত ‘লুটতরাজ’ ছবির ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’ গানটিতে প্রথম কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। সেই গানে আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছিলেন কনকচাঁপা। ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ওই গানটি। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালে আইয়ুব বাচ্চুকে দিয়ে আবার চলচ্চিত্রে গান করান পরিচালক কাজী হায়াত। ওই বছরে মুক্তি পাওয়া ‘আম্মাজান’ ছবির ‘আম্মাজান আম্মাজান তুমি বড়ই মেহেরবান’ গানটিতে কণ্ঠ দেন বাচ্চু। সেটিও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close