reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৩ নভেম্বর, ২০১৯

তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি অব্যাহত থাকুক

দেশে শহর-গ্রামের ব্যবধান আর আগের মতো নেই। গ্রাম এখন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত। গ্রামীণ জনপদে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানির পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধাও অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’। তবে নির্বাচনী ইশতেহারে এটা যোগ করার আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এবার ক্ষমতায় আসতে পারলে প্রতিটি গ্রামকে শহর বানানো হবে। বাস্তবে হচ্ছেও তাই। প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধার কারণে গ্রাম ও শহরগুলোর পার্থক্য খুব বেশি নেই। আর এরই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে স্বাভাবিকভাবেই অবকাঠামো এবং প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে শহর ও গ্রামের কোনো পার্থক্য থাকবে না।

বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৬৯ শতাংশ গ্রামে বাস করে। অবশিষ্ট ৩১ শতাংশ বাস করে শহরে। কিন্তু নানা সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করলে গ্রাম পিছিয়ে থাকলেও অগ্রসরের মাত্রাটাও কম নয়। বিশেষ করে গ্রামের তথ্যপ্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিঃসন্দেহে চোখে পড়ার মতো। আর গ্রামের মানুষকে শহরের এই সুবিধা দিতে কাজ করছে ডিজিটাল সেন্টার। বর্তমানে ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ১৫০টির বেশি সেবা দেওয়া হচ্ছে। সময়ের প্রয়োজনে ডিজিটাল সেন্টারকে সবার জন্য একটি ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে সরকার। গত সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) উদ্যোগে ডিজিটাল সেন্টার নিয়ে আয়োজিত ইনোভেশন টক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। ডিজিটাল সেন্টারের নবম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই ‘ইনোভেশন টক’ সেশনে তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন হচ্ছে শহরের সব সুবিধা গ্রামীণ মানুষের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া। শুধু নদীভাঙন বা দারিদ্র্যের কারণেই মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে আসে না, বরং শিক্ষিত যুবসমাজের মধ্যেও শহরে আসার প্রবণতা বেশি, ভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে। তাদের যদি গ্রামে রেখেই শহরের সুবিধা দেওয়া যায়; তাহলে তাদের শহরে আসার প্রবণতা ক্রমেই হ্রাস পাবে। তাই তাদের একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার দিয়েই ঢাকা বা দেশ তো বটেই, পুরো বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া যায়। আর এই কাজটিই করছে ডিজিটাল সেন্টার। সারা দেশে ৫ হাজার ৮৬৫টি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় সরকারের সেবা পৌঁছে দিতে শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের কাছে সাফল্যের দৃষ্টান্ত হিসেবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। বর্তমানে প্রতি মুহূর্তে সেবার ধরন পাল্টাচ্ছে। মানুষের কাছে এসব সেবা পৌঁছে দিতে নতুন নতুন কৌশল নিতে হচ্ছে। গ্রামের মানুষের জন্য সেই কাজটি করছে এটুআই। সংগত কারণেই আমরা অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের সাফল্য কামনা করছি।

মনে রাখতে হবে, বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির কোনো বিকল্প নেই। আর সেই বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দেশে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে। যার সুফল পাচ্ছে গ্রামের মানুষ। এতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। মজবুত হচ্ছে জাতির অর্থনীতির ভিত। স্বাধীনতা-পরবর্তী কয়েক দশক ধরে শহর ও গ্রামীণ অর্থনীতির যে বিশাল ব্যবধান চোখে পড়ত। ক্রমান্বয়ে গ্রামের সেই চেহারা আমূল বদলে যাচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে গ্রামের মানুষের জীবনযাপন ও চিন্তাচেতনার ধারাÑ আর এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close