reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ জুলাই, ২০১৯

দুধে মাত্রাতিরিক্ত সিসা কমাতে হবে

বিষয়টিকে ভেজাল বলা যাবে না। কোনো একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়। জেনে হোক বা না জেনে, ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছায় আমরা যে আমাদের গো সাম্রাজ্যে অখাদ্য-কুখাদ্যের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে এ সমস্যার জন্ম দিয়েছি, একা আজ অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সমষ্টিগতভাবে আমরাই যে দায়ী, সে কথাও মিথ্যা নয়। ৫৪ হাজার বর্গমাইলে দুটি শব্দে বাজার বেশ ভালো। যার একটি হচ্ছে দুর্নীতি আর অপরটি ভেজাল। প্রতি ইঞ্চি ভূমিতে এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। পরিশেষে পাস্তুরিত দুধেও তা পাওয়া গেল। তবে এ ক্ষেত্রেও আমাদের হোঁচট খেতে হয়েছে। বিষয়টি নির্ণয় করতে গিয়েও আমরা ভেজাল আর দুর্নীতির মুখোমুখি হলাম। একপক্ষ বলছে, সিসা আছে। অন্যপক্ষের মতামত নেই। দুপক্ষই একসঙ্গে সঠিক হতে পারে না। একপক্ষের হিসাবে গরমিল আছে। কিন্তু কেন! এই কেনর উত্তর খুঁজতে গেলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসার সম্ভাবনাই বেশি। সামনে এসে দাঁড়াবে দুর্নীতি ও ভেজাল। এ দুটি শব্দের সঙ্গে আমাদের যে সখ্য, তাতে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা কতটা সম্ভব, বলা খুব কঠিন।

তবে দুধে সিসার মাত্রা বেড়ে গেলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য যে ক্ষতিকর, এ কথা সত্য। এর চেয়ে বড় সত্য, এত কিছু জানার পরও আমরা এ দুই বিশেষ শব্দের ভালোবাসার বন্ধন থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি। যদিও আমরা জানি, নিশ্চিতভাবে আগামী প্রজন্মকে আমরা নিজ হাতে হত্যার মহাযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছি; যা কখনো কোনো সভ্য সমাজের মানুষ করতে পারে না।

পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই অনুমোদিত ১০টি ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধের নমুনায় গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ২৫ জুন বিএসটিআই জানিয়েছিল, বাজারে থাকা তাদের অনুমোদিত ১৪টি ব্র্যান্ডের ১৮টি পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষায় জনস্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি। শুনানিকালে মহামান্য আদালত জানিয়েছেন, একপক্ষ বলছেন দুধে কোনো ক্ষতিকর উপাদান পাওয়া যায়নি, অপরপক্ষের বক্তব্যে বলা হয়েছে ক্ষতিকর উপাদান আছে। বক্তব্য দুটি সাংঘর্ষিক। দুধ ও দুগ্ধপণ্য নিয়ে কোনো রাজনীতি থাকার কথা নয়, এটি জনস্বাস্থ্যের বিষয়। আদালতের বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরাও বলতে চাই, মানুষের জীবন নিয়ে এ ধরনের ছলচাতুরী কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। আমরা সত্য উচ্চারণের পক্ষে থাকতে চাই। আর সে কারণেই মিথ্যা উচ্চারণকারীদের শাস্তির দাবি রাখছি। কারণ তাদের এই উচ্চারণ কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। যদি তাদের এই প্রতারণার কোনো বিচার না হয়, তাহলে সত্য পরাজিত হবে এবং দুর্নীতি ও ভেজালের রাজত্বে ভেজাল ও দুর্নীতি আরো বলবান হবে। যাকে সভ্যসমাজের কেউ সমর্থন করে না, একই সঙ্গে আমরাও অসমর্থনের কথা জানালাম।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close