যত গর্জে তত বর্ষে না
আজ খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়। মিডিয়ার হাব-ভাবে মনে হচ্ছে সংঘাত অনিবার্য। রাজনৈতিক দলগুলো ওরাল শব্দাবলি বলছে, আমরাও প্রস্তুত। ফলে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় মানুষ। মিডিয়া বলছে, রায়কে কেন্দ্র করে অনেক দিন পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। যদিও কোনো দল প্রত্যক্ষভাবে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি। তবে পরোক্ষে ঘোষণা এসেছে একাধিক। পত্রিকা বলছে, বিএনপির উসকানিতে পা না দিয়ে সতর্কভাবে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের আর আদালতপাড়ায় লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটাতে চায় বিএনপি। সরকারের ভূমিকা হবে নৈরাজ্য মোকাবিলায়
সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ।
এত কিছুর পরও বাংলা ভাষার একটি প্রবচন মনে করিয়ে দেয় প্রকৃত বাস্তবতা। প্রবচনে বলা হয়েছে, ‘যত গর্জে তত বর্ষে না’। আবার অপর এক প্রবচনে বলা হয়েছে, ‘যা রটে তার কিছু তো বটে’। সুতরাং, একেবারে যে কিছুই ঘটবে না সে কথা যেমন বলা যাবে নাÑআবার বিশাল কিছু ঘটতে যাচ্ছে এ তথ্যও সত্য নয়। শক্তির ভারসাম্যে আওয়ামী লীগ ও তার নেতৃত্বাধীন সরকার এ মুহূর্তে অনেক বেশি শক্তিশালী। বিএনপি ততটা নয়।
আন্দোলন আর ভোটের বাক্সে ভোট দেওয়া বা চাওয়া এক জিনিস নয়। অস্বীকার না করেই বলা যায়, এ দেশে বিএনপির সমর্থক কম নয়। তবে তার অধিকাংশই ভাসমান, সংগঠিত নয়। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে। সাংগঠনিক দক্ষতা এবং অদক্ষতার ভারসাম্যের কারণেই বলা যায়, ‘যত গর্জে তত বর্ষে না’। আজও তার ব্যত্যয় হবে না। তবে সাধারণ মানুষ যে উৎকণ্ঠায় আছে সে কথা অস্বীকার করা যাবে না। ‘ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখে ডরায়Ñএটাই স্বাভাবিক। তারা ভাবছেন, রায়কে কেন্দ্র করে দেশের সার্বিক রাজনীতি ও পরিস্থিতি কোনদিকে যাচ্ছে! তারা কি আবার কোনো সংঘাতময় দিনের মুখোমুখি হতে চলেছে?
আমরা মনে করি, বর্তমান সময় আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে বলছে, ‘না’। সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কেননা, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে এবং গড়তে যে ক্ষমতা এবং যোগ্যতার প্রয়োজন হয় সম্ভবত বর্তমান বিএনপির সেখানে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এ দেশের মানুষ নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি করে আর উপন্যাস তৈরিতে রাজি নয়। তারা আপস-মীমংসায় উৎসাহী।
"