আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২০ নভেম্বর, ২০১৯

জিনবাহী রোগ গোপন করায় স্বাস্থ্যসেবার বিরুদ্ধে মামলা

লন্ডনে এক নারী তার মেয়ের জন্মের পর নিজের জিনবাহী একটি রোগের কথা জানতে পেরে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগে আদালতে গেছেন। হাইকোর্টকে ওই নারী বলেছেন, রোগটির কথা তাকে আগে জানানো হয়নি। আগে জানলে তিনি গর্ভপাত করতেন।

বিবিসি জানায়, বাবার জিনগত ত্রুটি থেকেই বংশানুক্রমে ওই নারী মস্তিষ্কের ভয়াবহ হান্টিংটন’স ডিজিজের বাহক এবং এ কারণে তার জন্ম দেওয়া মেয়েরও রোগটি হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ। এ রোগে মানুষের মস্তিষ্কের কোষ দ্রুত মরে যায়। ওই নারীর বাবার এ রোগ ধরা পড়েছিল এবং তাকে চিকিৎসাও করা হয়েছিল। কিন্তু সেই তথ্য গোপন করে যতœশীলতার দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগে ওই নারী এখন যুক্তরাজ্যের তিনটি ‘ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস’ (এনএইচএস) ট্রাস্টের বিরুদ্ধে মামলা করছেন।

যদিও বাবার অনুরোধেই মেয়েকে সে কথা জানানো হয়নি। এ রোগের কথা জানলে মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে কিংবা গর্ভপাত করাতে পারেÑ এমন আশঙ্কা থেকেই চিকিৎসকদের বিষয়টি গোপন রাখতে বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এনএইচএস কর্মকর্তারা বলেন, মামলাটি মানুষের প্রতি এনএইচএসের যতœশীল হওয়ার দায়িত্ব এবং গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্বকে মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে। ওই নারীর মেয়ের বয়স এখন ৯ বছর। শিশুটির সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই ওই নারীর নাম সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি। সেখানে তাকে এবিসি নামে ডাকা হয়েছে। বিবিসি জানায়, এবিসির বাবা ওই রোগের কারণে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাদের জীবনে সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটে ২০০৭ সালে। যখন তার বাবা তার মাকে গুলি করে হত্যা করে।

ওই ব্যক্তি নরহত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্য আইনে তার শাস্তি হ্রাস পায়। তখন বলা হয়েছিল, তিনি সম্ভবত হান্টিংটন’স রোগে ভুগছেন। এ রোগের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির চলাফেরা, বিচারবুদ্ধিতে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তি বেশির ভাগ সময় স্বভাববিরুদ্ধ আচরণ করেন এবং মাঝেমধ্যেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন। ২০০৯ সালে সেন্ট জর্জের ‘এনএইচএস ট্রাস্ট’ ওই ব্যক্তির হান্টিংটনের রোগ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে। কিন্তু তিনি তার মেয়ে এবিসি’কে এ কথা জানাতে চাননি। কারণ, এবিসি তখন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

কিন্তু সন্তান জন্মের চার মাস পর এবিসি হঠাৎ করেই তার বাবার জিনগত রোগের কথা জেনে যান এবং পরীক্ষার পর নিজেও একই জিনগত ত্রুটি বহন করছেন বলে জানতে পারেন। যদিও এবিসির মেয়ের এখনো কোনো পরীক্ষা হয়নি। তবে তার জিনেও একই ত্রুটি থাকার আশঙ্কা ৫০ : ৫০।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close