আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৩ এপ্রিল, ২০১৯

ভোটের সময় আসেন নেতা বাকি সময়ে বাঘ

রামপুরিয়া মহব। পিলিভিট ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের একেবারে গা ঘেঁষা এই গ্রামে বাস অন্তত শ’সাতেক বাঙালির। ‘বাঘের বাড়ি’ থেকে দূরত্ব মেরেকেটে ৫০০ থেকে ৭০০ মিটার। মাঝে দাঁড়িয়ে শুধু বৈদ্যুতিক তারের বেড়া। কোথাও আবার তা-ও নেই!

চোখে তেমন দেখেন না। জবাব দিয়েছে হাঁটুও। তবু প্লাস্টিকের টেবিলে চায়ের কাপ আর হাতড়ে খোঁজা হাতে নোনতা বিস্কুট গুঁজে দিতে দিতে ১০০ ছুঁইছুঁই সুরুবালা দেবনাথ বলছিলেন, এটুকু খাও বাবা। এই আমাদের খাবার। আর আমরা বাঘের।

স্থানীয় বাসিন্দা মিঠুন দে বলছিলেন, পিলিভিটে বাঙালি নেহাত কম নয়। প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ। কিন্তু অধিকাংশই এই তল্লাটে। সারদা, চুকা নদীর ধারে। জঙ্গলের গা ঘেঁষা একের পর এক গ্রামে। অভিযোগ, পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানে অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তারা ভারতে এসেছেন সেই ১৯৫৯-৬০-৬২ সালে। কিন্তু এতদিন পরেও এ দেশ তাদের আপন করে নেয়নি।

বাংলা বলা সাংবাদিক এসেছেন শুনে এক ডাকে জড়ো হয়ে গেল প্রায় পুরো গ্রাম। দুলাল মিশ্র, অরিজিৎ দে, জীবন হীরা, দুলাল মিশ্রদের দাবি, স্রেফ গত সাত থেকে আট মাসে এই অঞ্চলে বাঘের হানায় প্রাণ গিয়েছে সাত থেকে আটজনের। দুই থেকে তিন বছরে বাঘের পেটে গিয়েছেন ৩০ থেকে ৩৫ জন। কোনোক্রমে প্রাণ হাতে করে বেঁচে থাকা।

অভিমানী গলায় হরেকৃষ্ণ বিশ্বাস বলছিলেন, আমরা যারা সাবেক পূর্ব পাকিস্তান থেকে জমিজমা, ভিটে-মাটি ছেড়ে এ দেশে এসেছিলাম, খোঁজ নিয়ে দেখুন, পুনর্বাসনে তাদের এক বড় অংশেরই ঠাঁই হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ইত্যাদি রাজ্যে। জঙ্গলের গা ঘেঁষে। ওই যে কথায় আছে না, বাঘের সঙ্গে শত্রুকেই লড়াই করতে পাঠানো ভালো। দুই পক্ষের যে কেউ মরলেই ক্ষতি নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close