আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সামরিক যানের ধাক্কায় বিক্ষোভকারী নিহত
আবার ফুঁসে উঠছে কাশ্মীর
ভারতীয় সামরিক যানের ধাক্কায় ২১ বছর বয়সী এক তরুণ নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে নতুন করে ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে কাশ্মীর। স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা গাড়িটিকে থামানোর চেষ্টা করে। তবে গাড়িটি না থামিয়ে চালক তা আন্দোলনকারীদের ওপর উঠিয়ে দেন। সে সময় গুরুতর আহত হন কাশ্মীরি তরুণ কায়সার আহমদ ভাট। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার তিনি মারা যান। স্বজনদের দাবি, কায়সার আত্মরক্ষার সুযোগই পাননি। একে ঠা-ামাথার খুন বলে উল্লেখ করেছেন তারা। তবে এ ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলছে ভারতীয় রিজার্ভ পুলিশ (সিআরপিএফ)। তাদের দাবি, পাথর নিক্ষেপকারী কাশ্মীরিরা সেনাবাহিনীর গাড়িটির নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছিল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার কাশ্মীরে সাপ্তাহিক পাথর নিক্ষেপ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিল কাশ্মীরিরা। আর সে সময় কায়সার আহমদ ভাটকে সামরিক যান দিয়ে ধাক্কা দেওয়া হয়। গত এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এটি এ ধরনের দ্বিতীয় গাড়িচাপার ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আলজাজিরাকে বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর শ্রীনগরের নৌহাট্টা এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর যানটি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। শহীদ আহমেদ নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিক্ষোভকারীরা গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কাজ হয়নি।
শনিবার শেরি কাশ্মীর ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের মেডিকেল সুপারিটেনডেন্ট ফারুক জান জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি হওয়া কায়সার ফুসফুসে তীব্র সংক্রমণের কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন। শনিবার তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। স্বজনরা জানান, কায়সারের প্রচ- রকম অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়েছিল।
কায়সারের চাচাতো ভাই আহমদ বলেন, ও প্রতি শুক্রবার বিক্ষোভে অংশ নিত। গাড়িটি ছুটে আসায় সে হতভম্ব হয়ে পড়েছিল। নিজেকে বাঁচানোর কোনো সুযোগই পায়নি ও। তার মা-বাবা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছোট দুটি বোন আছে। তাদের খালা দেখাশোনা করতেন।
এদিকে শনিবার কাশ্মীরে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। লোকজনকে রাস্তায় নামা থেকে বিরত রাখতে অঞ্চলের প্রধান শহরের পুরোনো অংশগুলোয় কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও শনিবার কায়সারের জানাজায় শত শত মানুষ অংশ নিয়েছেন। সেখানেও টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, পুলিশের গাড়িটি পেছন থেকে বিক্ষোভকারীকে ধাক্কা দিচ্ছে এবং গাড়ির চাকা দিয়ে তাকে পিষে দিচ্ছে।
"