প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
বন্ধুর সঙ্গে স্বপ্নের বিয়ে ক্যানসার আক্রান্ত শিশুর
জীবনের মর্ম বুঝে ওঠার আগেই মৃত্যুর জন্য প্রহর গোনা শুরু হয়ে গেছে তার। দুরারোগ্য ক্যানসারে (নিউরোব্লাস্টোমা) আক্রান্ত সে। মাথার সব চুল ঝরে গেছে মরণ রোগের কোপে। আয়নার সামনে দাঁড়ালে ভয়ে, দুঃখে কাঁদতে শুরু করে পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়েটা। মৃত্যুর দিকে দ্রুত এগোচ্ছে সে। কিন্তু চিকিৎসার কষ্ট, মৃত্যুর ভয়ও তার মনের জোরকে, তার ভালোবাসাকে তার থেকে কেড়ে নিতে পারেনি। বিয়ের মর্ম সে বোঝেনি। তবু নিজের প্রিয় বন্ধুকে বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল ছোট্ট মেয়েটির। দুই পরিবারের সম্মতিতে, নিজের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছয় বছরের হ্যারিসন গ্রিয়ারকে বিয়ে করল এইলেড প্যাটারসন। গতকাল শুক্রবার আনন্দ বাজারপত্রিকায় এ সংবাদ প্রকাশ পায়।
ঘটনাটি স্কটল্যান্ডের। হাসিখুশি একরত্তি মেয়েকে তিলে তিলে প্রতিদিন ফুরিয়ে যেতে দেখছেন প্যাটারসন পরিবার। এইলেডকে বাঁচাতে চেষ্টার ত্রুটি করেনি গ্রিয়ার পরিবারও। দুই পরিবারই নানা অসহায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ক্যানসারের কষ্ট ভুলিয়ে মেয়েটির মুখে হাসি ফোটাতে। এ অবস্থায় এইলেড নিজেই যখন প্রিয় বন্ধু হ্যারিসনকে বিয়ে করার আবদার করে বসল, তখন একটুও না ভেবে তাতে সম্মতি দিল দুই পরিবার। শুধু সম্মতি কেন, এইলেডের এই ইচ্ছেকে তার ছোট্ট জীবনের স্মরণীয়তম মুহূর্ত করে রাখতে তোড়জোড় শুরু করে দেয় দুই পরিবার। গত রোববার, এইলেড-হ্যারিসনের বিয়ে উপলক্ষে একত্রিত হলেন দুই পরিবারের সদস্যরা। এর আগে কখনো কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে যায়নি হ্যারিসন। তাই সন্ধ্যার প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি আয়োজনই ছিল তার কাছে একেকটা চমক। আর ছোট্ট এইলেড তো বেজায় খুশি তার প্রিয় বন্ধুকে পাশে পেয়ে। গোলাপি ফ্রকে ছোট্ট পরীর মতো এইলেডকে ঘিরে উৎসবে মেতেছিলেন উপস্থিত সকলেই। এইলেডের মা গেইল প্যাটারসন শোনান এইলেডের ছোট জীবনের নানা গল্প। ছোট্ট মেয়েটির ইচ্ছে পূরণের জন্য এত আয়োজন। অথচ যাকে ছাড়া এই গোটা আয়োজনই সম্ভব হতো না, সেই হ্যারিসন কি জানে সে কেন আজ এই অনুষ্ঠানে এসেছে! কেন তাকে আর তার বন্ধুকে ঘিরে এত আয়োজন! ‘আমার মনে হয় ও বুঝতে পেরেছে। কারণ, এই মুহূর্তে হ্যারিসনও ওর বন্ধুর খুশির জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত’ -বলেন হ্যারিসনের বাবা।
"