প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
মৃত্যুর আগে মেরিলিন ফোন করেন কেনেডিকে!
বউ ঘরে থাকলে, কেনেডির নাকি মন ভালো থাকত না! থাকবেই বা কী করে! যেখানেই তিনি, সেখানেই তাকে ঘিরে সুন্দরীদের ভিড়। তাদের সঙ্গে জন এফ কেনেডিন কৃষ্ণ- গোপিবালা সম্পর্ক। গোপন বৈঠকের মাঝেই সঙ্গিনীদের নিয়ে কতবার যে পাশের কেবিনে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেন! বলতেন, মেয়েদের সঙ্গ-সুধা ছাড়া বেশিক্ষণ কাজ করলে তার মাথা ধরে যায়! নিত্যনতুন নারীসঙ্গ, কলেজ-ছুট কিশোরীদের সঙ্গে সুইমিং পুলে দাপাদাপি, উত্তাল যৌনতাড়নাÑপ্রেসিডেন্ট কেনেডির এসব কেচ্ছাকীর্তি একসময় ছিল মার্কিনদের চা আর মদের আড্ডায়। কাগজে কাগজে কত লেখালেখি। এই প্রেসিডেন্টের প্রেমে পড়লেন হলিউডি সেক্স বম্ব মেরিলিন মনরো! তার তখন দুঃসহ নিঃসঙ্গতা! তৃতীয় বর, লেখক ও নাট্যকার আর্থার মিলারের সঙ্গে সম্পর্ক চুকেবুকে যাচ্ছে। নাম জড়িয়ে পড়ছে কখনো সহ-অভিনেতা-পরিচালক-প্রযোজকের সঙ্গে। কখনো হাওয়ায় উড়ছে গোপন প্রেমের গুজব। তবে সবচেয়ে চর্চিত, কেনেডির সঙ্গে সম্পর্ক!
দুজনের আলাপ হলো এক রাত-পার্টিতে। সে সময় কেনেডি পার্টিতে মানেই তাকে ঘিরে রতি-রাত! হাসতে হাসতে নিজের প্রাক্তনীকে তিনিই জিজ্ঞেস করতে পারেন, ‘নতুন মেয়ে দিতে পার?’ একবার প্রেসিডেন্টকে ঘিরে এসব কথা হচ্ছে, অদূরে এক দঙ্গল পুরুষ-পরিবৃত মনরো। প্লাটিনাম হোয়াইটের আভা তার চুলে। কেনেডির চোখের দিকে তাকিয়ে কামনার আঁচ পাচ্ছিলেন মনরো। হিসহিসিয়ে এসে বসলেন ঠিক কেনেডির পাশটিতে। শুকনো ঘাসে যেন আগুন ছড়াল! মনরোর টুকরো কথায় আর সম্মতির নয়নঠারে কেনেডির বুঝি তর সইছিল না আর! সেই শুরুÑপ্রেমে পড়লেন দুজন।
মোহময় এই প্রেমের সিলসিলা নিয়ে কম চর্চা হয়নি মার্কিন মুলুকে। কোনো কোনো এজেন্সি লেখে, মাঝে মাঝে জন কেনেডি মেরিলিনের সঙ্গে ডেটিং করতেন সমুদ্র কিনারে, এক আত্মীয়ের বাড়িতে। এমন এক গোপন অভিসারে ১৯৬২ সালের মার্চে একবার কেনেডি ও মনরো পাম স্প্রিং-এর একটি জায়গায় দেখা করেন। মনরোকে কেউ যাতে চিনতে না পারে, সে জন্য পরচুলা পরেছিলেন সুন্দরী। আবার এমন তথ্যও মেলে, যেখানে মনরো নাকি নিজেই একসময় মার্কিন ফার্স্ট লেডি জ্যাকলিন কেনেডিকে বলেন, ‘তোমার স্বামীকে ভালোবাসি।’
মৃত্যুর আগে কয়েক মাস ধরে টানাপড়েন। সে বছরই তৃতীয় স্বামী আর্থার মিলারের সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। মনরো সে সময় ক্লান্ত। দুটো অস্ত্রোপচার হয়েছে, ওজন কমে গেছে ২৫ কেজি। তবু শুটিং শুরু হলো, তার শেষ সিনেমা ‘দ্য মিসফিটস’-এর। প্রায় দিনই ফ্লোরে গরহাজির। কোনো দিন বলেন, সাইনাস ইনফেকশন। কোনো দিন জ্বর, মাথাব্যথা। এরই মধ্যে কেনেডির জন্মদিন, ২৯ মে। হোয়াইট হাউস থেকে আমন্ত্রণের চিঠি এলো। অনুষ্ঠান হবে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে। ইউনিটের সবাই ভেবেছিল, অভিনেত্রী যেতেই পারবেন না। কিন্তু মনরো গেলেন। হীরকদ্যুতি ছড়ানো সাদা ক্রিস্টালের পোশাক, দিনটা ছিল শনিবার। ঠিক রাত সাড়ে ৮টায় পার্টি শুরু হলো। কোহল চলকে পড়ছে পানপাত্রে। প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন সকলে। টইটম্বুর রাত। একসময় উঠে গিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়ালেন মনরো। মঞ্চে তাকে ঘিরে সাইকেডেলিক আলোকবৃত্ত। মনরো একটু থামলেন, কী যেন ভাবলেন। অতঃপর, সেই চিরচেনা হাসি, চোখের তারায় ঝিলিক। মোহময় কণ্ঠে কেনেডির দিকে চেয়ে গেয়ে উঠলেন, হ্যাপি বার্থডে টু ইউ...। মৃত্যুর মাত্র আড়াই মাস আগে কোনো পাবলিক অনুষ্ঠানে সেটাই ছিল মনরোর শেষ উপস্থিতি! মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই লস অ্যাঞ্জেলেসে দেহ মিলল এক রাত্তিরে। সে দিন আগস্টের ৫ তারিখ, ১৯৬২। মনরো নাকি শেষ ফোনটি করেছিলেন প্রেসিডেন্টকেই! ব্যক্তিগত টেলিফোনে। যে ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলতেন দুজনে। সারা রাত্তির।
"