নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ অক্টোবর, ২০১৯

বাসযোগ্য নগর গড়তে আইনের কঠোর প্রয়োগ দরকার : গণপূর্তমন্ত্রী

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশে আইন, নীতি ও নিয়মের ঘাটতি নেই। বাসযোগ্য নগর গড়ে তুলতে দরকার আইনের কঠোর প্রয়োগ। আমাদের মানসিকতারও পরিবর্তন প্রয়োজন। রাজউকের আইন আছে, পরিবেশের আইন আছে, যানবাহন আইন আছে। কিন্তু আমরা এ আইন অনুসরণ করছি না। আমাদের যথাযথভাবে আইন অনুসরণ করতে হবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্মেলন কক্ষে কালের কণ্ঠ আয়োজিত ‘বাসযোগ্য নগরী গড়ে তুলতে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘কিছু অতি মুনাফা লাভের প্রবণতা থেকে আইন না মানার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এটা সবচেয়ে ভয়ংকর সমস্যা। এফআর টাওয়ারের ঘটনার পর ঢাকার বহুতল ভবন পরিদর্শন করে ১ হাজার ৮১৮টি বহুতল ভবন পাওয়া গেছে, যেখানে কোনো আইনের অনুসরণ করা হয়নি। এ ভবনের মালিকরা অর্থনৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। তারা কিন্তু আইন জেনেও তা মানেননি।

দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে মন্ত্রী আরো বলেন, এফআর টাওয়ারের ঘটনায় ৬২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঘটনায় একটি পত্রিকার সংবাদের ওপর ভিত্তি করে তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৩০ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। রাজউকের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করেছি। সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাজ চূড়ান্ত করার আগে সরকারের স্বার্থে টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমরা এ রকম অনেক দুঃসাহসী কার্যক্রম গ্রহণ করছি। কিন্তু বিস্তৃত পরিসরের সব পরিবর্তন রাতারাতি করা বাস্তবসম্মত নয়।

পুরোনো ঢাকার পুনঃউন্নয়ন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুর ও জাপান পুরোনো সংস্কৃতি রক্ষা করে পুরোনো শহরকে পুনঃউন্নয়নের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন শহর গড়ে তুলেছে। পুরোনো ঢাকার ভবনগুলো ভয়ংকর ঝুঁকিতে রয়েছে। পুরোনো ঢাকার জনগণের রক্ষণশীলতা ও মমত্বের জায়গার প্রতি সম্মান রেখে বলছি, আধুনিক ব্যবস্থাপনায় পুরোনো ঢাকার পুনঃউন্নয়ন কাজে নিশ্চয়ই সেখানকার জনগণ আমাদের সহযোগিতা করবেন।

তিনি বলেন, ড্যাপের অসামঞ্জস্য দূর করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। বিল্ডিং কোড গেজেট আকারে প্রকাশ হচ্ছে শিগগিরই। প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন চান। প্রধানমন্ত্রী চান, ভবন পরিবেশ সম্মত কি না, ভবন পারিপার্শ্বিকতা রক্ষা করে কি না, ভবনের সুদূরপ্রসারী কোনো প্রভাব আছে কি না। নাগরিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সংবেদশীল।

গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বাসযোগ্য নগরী গড়ে তুলতে লিখিত পরামর্শ দিয়ে অনুরোধ জানান।

দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. রাশিদুল ইসলাম, কালের কণ্ঠের ভারপ্র্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল, বিএলডিএ’র মহাসচিব মোস্তফা কামাল মহিউদ্দীন, রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন, রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান প্রমুখ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close