নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ আগস্ট, ২০১৯

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আর অসাম্প্রদায়িক চেতনার ক্ষেত্রে আমাদের সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। ধর্ম যার যার, উৎসব সবারÑ এ নীতিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’ গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় দশম সংঘরাজ জ্যোতিঃপাল মহাথেরু স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এদিকে, মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকার জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের হাতে সম্মাননা তুলে দিয়েছে একটি সংগঠন। গতকাল এফডিসিতে ‘শুধু সরকারি প্রচেষ্টা নয়, জনসচেতনতাই পারে ডেঙ্গু প্রতিরোধ’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠান শেষে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সর্বাত্মক চেষ্টার জন্য তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বিতর্কের আয়োজক প্রতিষ্ঠান ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় বাংলাদেশের সফলতার চিত্র তুলে ধরেন মো. তাজুল ইসলাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, এই রোগ মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা বেশি।

দশম সংঘরাজ জ্যোতিঃপাল মহাথেরু স্মরণানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংঘরাজ জ্যোতিঃপাল মহাথেরু বৌদ্ধ মহাবিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ শীলভদ্র মহাথের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এ মান্নান, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়–য়া, শ্রীমৎ ধর্মরক্ষিৎ মহাথের প্রমুখ।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সার্বজনীন রাষ্ট্র। এ দেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে বসবাস করছে। ধর্ম যার যার, অনুষ্ঠান সবারÑ এ রকম অনুভূতি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আপনারা দেখেন, ঈদের সময় বিভিন্ন দেশের অমুসলিম রাষ্ট্রদূতসহ অন্য নেতারা এই আনন্দ ভাগাভাগি করতে আসেন। তেমনিভাবে আমিও তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি।’

তিনি বলেন, ‘জ্যোতিঃপাল মহাথেরু আমার শ্রদ্ধাভাজন একজন ব্যক্তি। তার জন্মস্থান আমার সংসদীয় আসনের মধ্যে। সে হিসেবে তার সঙ্গে অনেক দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে আমার। তিনি ছিলেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ একজন মানুষ। তার আদর্শ ছিল সব প্রাণী সুখী হোক। তিনি সে আদর্শে মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে গেছেন।’

এর আগে গতকাল রাজধানীতে ডি?বেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজ?নে ডেঙ্গু প?রি?স্থিতি মোকা?বিলায় করণীয় নিয়ে ছায়া সংসদ বিতর্ক প্র?তিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। তবে সরকারের সঙ্গে জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা খুব কঠিন কাজ নয়।

বক্তব্যে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এবার ডেঙ্গুর মাত্রা আমাদের নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে। ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কেউই আগে অনুমান করতে পারিনি। অভিজ্ঞতার অভাব থাকলেও সরকার ডেঙ্গু মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। সফলতা-বিফলতার কথা না ভেবে আমরা বলতে চাই, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার এরই মধ্যে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে মারা যাওয়া অসচ্ছল পরিবারের কেউ চাইলে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা করা হবে।’

‘শুধু সরকারি প্র?চেষ্টা নয়, জনসচেতনতাই পারে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর?তে’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্র?তিযোগিতায় সভাপ?তিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহ?মেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির বক্তব্যে কিরণ বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি হিসাবের গরমিল জনমনে প্রশ্ন উঠেছেÑ আসলে কতজন মানুষ মারা গেছে। অসচ্ছল পরিবারের যেসব মানুষ ডেঙ্গুতে মারা গেছে, তাদের জন্য আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া উচিত।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক জান্নাতুল বাকেয়া কেকা, সাংবাদিক হাবিবুর রহমান রাহী, সাংবাদিক আতাউর রহমান কাবুল ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জাহিদ রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close