প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১২ জানুয়ারি, ২০১৯

মিয়ানমারের ২ সাংবাদিকের সাজা বহাল

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়নের তথ্য সংগ্রহের সময় গ্রেফতার রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের সাত বছরের সাজার রায় বহাল রেখেছেন দেশটির আপিল আদালত। রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে গত বছর সেপ্টেম্বরে সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) এবং কিয়াও সো ওরকে (২৮) সাত বছরের কারাদন্ড দেন একজন জেলা জজ। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুই সাংবাদিকের আপিল আবেদন গতকাল শুক্রবার খারিজ করে দিয়েছেন মিয়ানমারের হাইকোর্ট। ফলে তাদের আগের সাজাই বহাল রইল। তবে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের শেষ সুযোগ রয়েছে তাদের।

বিচারক অং নাইং তার রায়ে বলেন, আসামিরা নির্দোষÑ এমন দাবির পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ তারা উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ‘এটা তাদের জন্য উপযুক্ত শাস্তি। দুই সাংবাদিক সাংবাদিকতার নৈতিকতা মেনে চলেননি। তাদের ফাঁদে ফেলে গ্রেফতার করার যে অভিযোগ আসামিপক্ষ করেছে, সে বিষয়েও আদালত নিশ্চিত হতে পারেনি।’

এই রায়ের বিরুদ্ধে এখন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারবেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক। সেখানে যে রায় আসবে, সেটাই হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

গত সেপ্টেম্বরে জজ আদালতে দুই সাংবাদিকের সাজার রায়ের পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। মানবাধিকার ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন মিয়ানমারে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

গতকাল শুক্রবারের এই রায়ের পর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টেফেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ওয়া লোন ও কিয়াও সো ওর ওপর যেসব নিপীড়ন চালোনে হচ্ছে আজকের রায় সেসব অন্যায়ের একটি। তারা এখনো জেলে থাকার একটাই কারণ : যারা ক্ষমতায় আছে তারা সত্যের মুখ বন্ধ করতে চাইছে।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহ করা অপরাধ নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত মিয়ানমার এই ভয়ংকর ভুল শুধরে না নেবে ততক্ষণ পর্যন্ত দেশটিতে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা আসবে না। মিয়ানমার আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র চর্চার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেটা নিয়েও সন্দেহ থেকে যাবে।’ গত মাসে আপিল আবেদনের শুনানিতে দুই সংবাদিকের আইনজীবীরা তাদের কাছে পুলিশের ফাঁদ পাতার প্রমাণ থাকার এবং তাদের মক্কেলদের বিরুদ্ধে অপরাধের পর্যাপ্ত প্রমাণ না থাকার দাবি করেন। ‘নিম্ন আদালত এই মামলা ভুলভাবে উপস্থাপন করে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের দায় দুই সাংবাদিকের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন’ বলেও অভিযোগ করেন তারা।

বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং তা মিয়ানমারের শত্রুদের কাছে পাচার করে জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলার অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।’ সরকার পক্ষে আইনজীবী খিনে খিনে সোয়ে বলেন, আপিলের শুনানির সময় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গোপন নথি সংগ্রহ এবং তা নিজেদের কাছে রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ‘জাতীয় নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close