প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৬ মার্চ, ২০১৮

বাংলাদেশের মানুষ কি অসুখী হয়ে উঠছে?

সুখী হতে কে না চায়? এই সুখের খোঁজেই মানুষের জীবন অতিবাহিত হয়। কিন্তু তারপরও সবাই সুখী হতে পারে না। সুখের সংজ্ঞাও একেক জনের কাছে একেক রকম। জাতিসংঘের উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণায় পৃথিবীর কোন দেশ কতটা সুখী সেটি দেখানো হয়েছে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড। এবং সবচেয়ে কম সুখী আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডি। গত বছর এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১০ নম্বরে। কিন্তু এবার সেটি পাঁচ ধাপ নিচে নেমেছে। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক এ তালিকা তৈরি করেছে।

সেখানে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা হয়। যেমনÑ মাথাপিছু আয়, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার আয়ু, সামাজিক সহায়তা, উদারতা এবং দুর্নীতি। ২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘ এ তালিকা তৈরি করে আসছে। বাংলাদেশের অবস্থান তখন থেকে গত ছয় বছরে ১০৮ থেকে ১১০-এর মধ্যেই ছিল।

সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন সুখের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। সুখ সম্পর্কে একটা ধরণা করা যেতে পারে মাত্র। বাংলাদেশের মানুষ কি আরো অসুখী হয়ে উঠছে? এমন প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক শাহ এহসান হাবিব মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া এবং পাওয়ার মধ্যে যে এক ধরনের ফারাক তৈরি হচ্ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রযুক্তির বিকাশের কারণেই এ অবস্থা তৈরি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

অধ্যাপক হাবিব বলেন, ‘প্রযুক্তি বিকাশের কারণে বাংলাদেশের মানুষ এখন নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করতে শিখেছে। ফলে অনেক সময় তাদের মনে এক ধরনের হতাশারও তৈরি হচ্ছে। তারা জানতে পারছে অন্যরা কী পাচ্ছে আর আমরা কী পাচ্ছি?’ বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে যেকোনো মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, ‘কেমন আছেন?’ অধিকাংশ মানুষ উত্তর দেবে, ‘ভালো আছি।’

অধ্যাপক হাবিব মনে করেন, ‘এ ভালো মানে আসল ভালো নয়। এটা হচ্ছে সামাজিকভাবে কথা বলার একটি ধরন। মানুষ সাধারণত নিজের নেতিবাচক বিষয়গুলো সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চায় না। সে নিজেকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে চায়। সেজন্য সবাই বলে, ভালো আছি।’

এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষের সহ্য শক্তি অনেক বেশি বলে মনে করে এই সমাজবিজ্ঞানী।

অধ্যাপক হাবিব বলেন, কিন্তু আর্থিক মানদন্ডের চেয়েও তাদের কাছে বড় বিষয় হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শিক্ষা, চিকিৎসার সুযোগÑ এগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি বাকস্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। যার অর্থনৈতিক ভিত্তি ভালো তার কাছে বাকস্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ‘উচ্চবিত্তের চাহিদা এক রকম, মধ্যবিত্তের কিংবা নিম্নবিত্তের চাহিদা আরেক রকম। সুতরাং সুখের একটি শ্রেণি চরিত্র আছে,’ বলেন অধ্যাপক হাবিব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সুখের চাহিদায় রকমফের হয়।

১০ বছর আগে যে বিষয়গুলো বাংলাদেশের মানুষকে সুখী করতে পারত, এখন হয়তো সেগুলো আর পারছে না। এখন সুখের জন্য আরো নতুন উপকরণ যুক্ত হয়েছে। এমনটাই বলছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। সূত্র : বিবিসি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist