মাগুরা প্রতিনিধি

  ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

স্ত্রীর মর্যাদা পেতে স্বামীর বাড়ির সামনে সন্তানসহ অবস্থান

স্ত্রীর মর্যাদা ও সন্তানের পিতৃত্বের দাবি নিয়ে স্বামীর বাড়ির সামনে দুই দিন ধরে অবস্থান করছেন তন্বী খাতুন নামের এক নারী। গত শনিবার সকালে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে সেখানে তার ঠাঁই হয়নি। বরং শ্বশুর মনিরুজ্জামান মন্নু তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ১৫ দিনের কন্যা সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ির গেটে অবস্থান করছেন ওই নারী। স্ত্রীর মর্যাদা না পেলে আমৃত্যু স্বামীর বাড়ির সামনেই অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার রাড়ীখালী গ্রামে।

তন্বী খাতুন বলেন, ২০১৭ সালে তিনি মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে ক্লাস করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সৌদি প্রবাসী প্রতিবেশী চাচাতো ভাই এনামুল কবীর লিটনের সঙ্গে তার দেখা হয়। এ সময় লিটন তাকে বলেন, পার্শ্ববর্তী ধোয়াইল গ্রামে বিয়ে দেওয়া তার বড় বোন রানী খাতুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বাড়ির লোকেরা দ্রুত তাকে ফরিদপুর যেতে বলেছেন। এ অবস্থায় তিনি লিটনকে বড় ভাই হিসেবে বিশ্বাস করে তার মোটরসাইকেলে ওঠেন। পরে ফরিদপুর নেওয়ার কথা বলে তিনি তাকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেন। এরপর তাকে ঢাকায় নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। কিছুদিন ঢাকার একটি বাসায় তারা বসবাস করেন। এক পর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হলে স্বামী লিটন তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেন। তবে তিনি এতে রাজি হননি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিটন তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। গত ৬ জানুয়ারি তাকে ঝিনাইদহের আরাপপুর বাসস্ট্যান্ডে ফেলে রেখে পালিয়ে যান লিটন। পরে শ্বশুর বাড়িতে এলে তারা সেখান থেকে তাকে তাড়িয়ে দেয়। তারপর থেকে তার স্বামী লিটনও বাড়ি থেকে গাঢাকা দিয়েছেন। অবশেষে তিনি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্থানীয় ইউপি মেম্বর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা শ্বশুর মনিরুজ্জামান মন্নুর সঙ্গে একাধিকবার সালিশ বৈঠক করলেও তিনি পুত্রবধূকে বাড়িতে ঠাঁই দেননি। এ অবস্থায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি তার একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়।

অবশেষে তিনি এ ঘটনার বিচার চেয়ে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। একই সঙ্গে কন্যাসন্তানকে নিয়েই গত শনিবার সকালে স্বামীর বাড়িতে গেলে শ্বশুর মন্নু মিয়া তাকে বাড়ির বাইরে বের করে দেন। এরপর থেকে সারাদিন তিনি শিশু সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন। স্বামী, সন্তানের স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবস্থা করবেন বলে ঘোষণা দেন।

তন্বীর বাবা আলাল বিশ্বাস বলেন, মান সম্মানের দায়ে এক পর্যায়ে মেয়েকেসহ গোটা পরিবার বিষ খেয়ে মরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিবেশীরা মরতে দেননি। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান চান।

স্থানীয় ইউপি মেম্বর খালেক মেম্বর বলেন, বিষয়টি মীমাংসার জন্য তিনিসহ গোটা গ্রামবাসী একাধিকবার সালিশ করেছেন। কিন্তু লিটনের বাবা মনিরুজ্জামান মন্নু কারো অনুরোধই রাখেননি। অভিযুক্ত লিটনকে না পেয়ে তার বাবা মনিরুজ্জামান মন্নুর সঙ্গে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি গেট খোলেননি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist