reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ মার্চ, ২০১৮

সাহিত্যাকাশে একজন...

স্মৃতির বিনুনি সুতায় বেঁধে রাখি মমতার ছাঁয়াকোল। বিভুঁই উষ্ণতায় চৈতন্যচ্যুত পরাণেও হঠাৎ খেলে যায় উদয়-অস্তের খেয়াল। যদিও জং ধরা টিনে ছাওয়া হয়েছে মননের চৌচাল, তবু বিস্মিত হই, যখন দেখি দেশনন্দিত আবদুল্লাহর জনক সে আমাদেরই পড়শি এক, অতিথি নয়-এলাকার গৌরব। অপার তৃষ্ণায় ছুটে যাই স্বরূপ বিশ্লেষণে। যদিও কার্পণ্যতায় আড়ষ্ট হয় কণ্ঠস্বর, তবু দেখি সামনে মূর্ত্যমান এক দিব্য জ্যোতি কথাশিল্পী, সাহিত্য সাধক। যদিও একক পরিচয়ে নয় সীমাবদ্ধ। শিক্ষা বোর্ডের সর্বোচ্চ সম্মানিত পদে আসীন। স্বীয় মেধা, মনন, প্রজ্ঞা বলে খানবাহাদুর উপাধিতে ভূষিত। কলকাতার ‘শিক্ষক’ পত্রিকা এক মহৎ কর্মোদ্যোগ, বিনির্মাণের অপূর্ব শৈলী, জ্ঞান বিকাশের আলোক মিশন, তবু চেনার মধ্যে অনেক অচেনা, জানার মধ্যে সুদূর অজানা। অথবা প্রচেষ্টাহীন নশ্বর জীবন আমাদের সেই জিতেন্দ্রীয় সাধককে উন্মোচনের। গ-িবদ্ধ অসারতায় যেন আটকে আছে হৃদয়।

সাহিত্যবোধের অপূর্ব রসে সমৃদ্ধ তার ‘আবদুল্লাহ’। গ্রাম-বাংলার খেটে খাওয়া, ভুখা-নাঙ্গা মানুষের জীবনযাপনের বাস্তব প্রতিচিত্র। দুঃখ-ক্লেসের সোশ্যাল দর্পণ। কখনো কখনো একটি কবিতা বা একখানি সফল উপন্যাস কাউকে লেখকের মানদ-ের বিচারে করে শ্রেষ্ঠ। পৌঁছে দেয় খ্যাতির উচ্চশিখরে। কাজী ইমদাদুল হকের ‘আবদুল্লাহ’ যেন তেমনই এক। জীবন সংগ্রামে প্রত্যয়ী যুবক আবদুল্লাহর চরিত্র সৃষ্টায়নের দক্ষ রূপায়ণ। যেন হাজার বছর ধরে লিখেও শেষ হবে না তার বন্দনা। কখনো সে সমুদ্রের মতো প্রসারিত এক বিশালতা, কখনো উনুনমুখী আগুনের আঁচে পুড়ে যাওয়া মাটির হৃদয়। কিন্তু এই রঞ্জিত মাটির প্রাণ রসায়নকে বাষ্পোন্মোচিত করার সুতীব্র প্রাণোন্মাদনা আমাদের কই? এখন পরাবাস্তব কোয়ার্কের কার। হাইজেন বার্গের অনিশ্চয়তা নিয়ে বিভ্রান্ত সবাই। তবে হৃদয়ের লাব-ডাব এখনো সাহিত্যের কথা বলে। হোক না যন্ত্রায়ণ। পাখির কণ্ঠ থেকে গান চুরি করার মতো দুঃসাহস নেই কোনো যন্ত্রদানবের। তবু কৌলিন্যতা আর অসারতা যেন আমাদের সমাজের রন্ধ্রজাত প্রবণতা। প্রতি বছর ৪ নভেম্বরে জন্মদিন এলে শুধু দু-চার লাইন তোড়জোড়। গুটি কতক ভক্তের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার নামে মাত্র সম্মান রক্ষা। বাকি সময় যেন দীপ জ্বালানোর নেই কোনো প্রহরী। দক্ষিণবঙ্গের লক্ষ হাজার মানুষের জন্য সম্মানের মুকুট ছিনিয়ে আনা এই সাহিত্য রতœটিকে হয়তো সবাই জানি ‘আবদুল্লাহর’ জনক রূপে। কিন্তু কীভাবে তিনি তা হয়েছিলেন, ছড়িয়ে ছিলেন সাহিত্যের দিপ্যমান আলোকচ্ছটা, কবে তার জন্ম, কবে তার মৃত্যু সেই উদয়-অস্তের খবর রাখে কজনা। আমরা কি পারি না একটু সজাগ হতে? আমাদের মানবিক বোধকে একটু জাগ্রত করে ঋণ পরিশোধ করতে!

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist