reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০২ ডিসেম্বর, ২০১৮

বিজয়ের মাসে টাইগারদের ঐতিহাসিক জয়

ঢাকা টেস্টে এক ইনিংস ও ১৮৪ রানে জিতে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করলো সাকিব আল হাসানের দল। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে টাইগারদের সবচেয়ে বড় জয় এটি। এর আগে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানে জিতেছিল তারা।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৫০৮ রানের জবাবে মিরাজ-সাকিবের ঘূর্ণিতে ১১১ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ে ক্যারিবীয়রা। ৩৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিং করতে নেমে সফরকারী দল গুটিয়ে গেছে ২১৩ রানেই। দুই ইনিংসে ১২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন মিরাজ। সিরিজসেরার পুরস্কার গেছে অধিনায়ক সাকিবের ঝুলিতে।

চলতি বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটিতে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের লজ্জা সঙ্গী হয়েছিল তাদের। ঘরের মাঠে ওই হারেরই বদলা নিলো সাকিবের দল। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে তারা জিতেছিল ৬৪ রানে। মিরপুরে সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে ৭ সেশন হাতে রেখেই ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। ২-০ ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে টেস্টে চতুর্থ সিরিজ জিতল টাইগাররা।

এ নিয়ে টেস্টে দ্বিতীয়বার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ। ৯ বছর আগে ক্যারিবীয় সফরে গিয়ে ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল তারা। সবমিলিয়ে তৃতীয়বার প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাইয়ের লজ্জা দিল টাইগাররা। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে ৩-০ ব্যবধানে হারানোর মধ্য দিয়ে প্রথমবার কোনো প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল তারা।

মিরপুরে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়ে ওঠেছিল দ্বিতীয় দিনেই। টাইগারদের ৫০৮ রানের জবাবে ৭৫ রান তুলতেই ৫ উইকেটে খুইয়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রোববার তৃতীয় দিনে মাত্র ৫১ মিনিটি টিকেছে তাদের ইনিংস। স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান যোগ করে ১১১ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এটি তাদের সর্বনিম্ন ইনিংস।

মাত্র ১৬ ওভার বোলিং করে ৫৮ রান খরচায় মিরাজ একাই নেন ৭ উইকেট। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে তিনি উইকেট শিকারে পেছনে ফেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। ৩৬ টেস্টে ৫১ ইনিংসে ৭৮ উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। মাত্র ১৮ টেস্ট আর ৩২ ইনিংস খেলেই ৭৯ উইকেট শিকার করে ফেলেছেন মিরাজ। বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার এখন তিনি। এছাড়া অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ৩টি।

৩৯৭ রানে পিছিয়ে থাকায় ফলোঅনে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের দ্বিতীয়বার ব্যাটিং করার আমন্ত্রন জানান অধিনায়ক সাকিব। এর মধ্য দিয়ে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবার কোনো দলকে ফলোঅন করালো বাংলাদেশ। মাসখানেক আগে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২১৮ রানে এগিয়ে থেকেও অবশ্য তাদের ফলোঅন করায়নি টাইগাররা।

দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ২ রানেই অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে (১) হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন সাকিব। ১৪ রানের মাথায় মিরাজের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন কাইরন পাওয়েল (৬)। এরপর ১৫ রানের ব্যবধানে আরও দুই ব্যাটসম্যানকে হারায় ক্যারিবীয়রা। জোড়া আঘাত হানেন তাইজুল ইসলাম। তুলে নেন সুনীল আমব্রিস (৪) আর রস্টন চেজকে (৩)। ২৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

লাঞ্চের পর হেটমায়ার আর শাই হোপের ব্যাটে কিছুক্ষণ লড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেননি মিরাজ। দলীয় ৮৫ রানে হোপকে (২৫) সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে পঞ্চম উইকেট তুলে নেন তিনি। ৯ রান বাদে আঘাত হানেন নাঈম হাসান, তুলেন নেন শেন ডওরিচকে (৩)। ৯৬ রানে ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সপ্তাম উইকেটে দেবেন্দ্র বিশুকে নিয়ে একটা জুটি গড়ে তোলেন হেটমায়ার। দলীয় ১৪৭ রানে বিশু ফিরলে ভাঙে এই জুটি। তাকে সৌম্যর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান মিরাজ। তাতে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো এক ম্যাচে ১০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন এই অফস্পিনার। মিরাজ এখানেই থেমে থাকেননি। হেটমায়ারকে (৯৩) করেছেন সেঞ্চুরি বঞ্চিত। এরপর তিনি তুলে নিয়েছেন দেবেন্দ্র বিশুকেও (১২)। প্রতিশোধের শেষটা সম্পন্ন করেছেন তাইজুল, লুইসকে (২০) এলবির ফাঁদে ফেলে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঐতিহাসিক জয়,টাইগার,বিজয়ের মাস,হোয়াইটওয়াশ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close