ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০২ ডিসেম্বর, ২০১৮

চালকের আসনে বাংলাদেশ

প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও তাতে আপত্তি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। প্রথম দিনের খেলা শেষে দুই দলকে একই জায়গায় দেখিয়েছিল ক্যারিবীয়রা। কাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংশয়টা টাইগাররা দূর করেছেন তো বটেই, একইসঙ্গে চালকের আসনে বসে পড়েছে স্বাগতিক শিবির।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রথম ইনিংসে দলীয় সংগ্রহ ৫০০ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের রানের চাকা থেমেছে ৫০৮ রানে। ব্যাটিংয়ে দারুণ একটা দিন পার করার পর বল হাতে বাংলাদেশ আরো দুর্দান্ত। জবাব দিতে নামা ক্যারিবীয়দের শুরুতেই চেপে ধরেছেন সাকিব বাহিনী। ২৯ রানের মধ্যে সফরকারীদের পাঁচ উইকেট ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও ধাক্কাটা কিছুটা হলেও সামলে উঠেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শুরুর এই ভয়াবহ বিপর্যয় ক্যারিবীয়রা সামলে উঠেছে হেটমায়ার এবং ডওরিচের ব্যাটে। এ দুজনের কারণে দ্বিতীয় দিন নতুন আর কোনো অস্বস্তিতে পড়েনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ডওরিচ-হেটমায়ারের অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটিতে কোনো রকম দিন শেষ করেছে তারা। দিন শেষে পাঁচ উইকেটে ৭৫ রান করেছে অতিথি শিবির। বাংলাদেশের চেয়ে এখনো ৪৩৩ রান পিছিয়ে তারা। ফলোঅন এড়ানোটাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ তাদের। আজ তৃতীয় দিন ষষ্ঠ উইকেটের প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে ক্যারিবীয়দের দ্রুত গুটিয়ে দেওয়াই লক্ষ্য বাংলাদেশের।

প্রথম টেস্টে স্পিন নির্ভার একাদশ বানিয়েছিলেন নির্বাচকরা। চট্টগ্রাম টেস্টে একমাত্র পেসার যিনি ছিলেন, সেই মুস্তাফিজুর রহমান পুরো ম্যাচে বল করেছেন মাত্র চার ওভার। ঢাকা টেস্টে তো তাকেই দলে রাখেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। কেন পেসার ছাড়া খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ সেটাই কাল বুঝিয়ে দিয়েছেন সাকিব-মিরাজ। অতিথিদের পাঁচ ব্যাটসম্যানেরই স্টাম্প উড়িয়ে ফেলেছেন এই দুই স্পিনার। এত কম রানে প্রতিপক্ষ দলের পাঁচ উইকেট তুলে নেওয়ার কীর্তি এবারই প্রথম দেখাল বাংলাদেশ। এর আগে এই দলটির বিপক্ষেই শুরুর ৪৪ রানে পাঁচ উইকেট নিয়েছিল টাইগাররা।

এই দুজনই ধসিয়ে দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার। সাকিব দুটি এবং মিরাজ তিনটি উইকেট তুলে নিয়েছেন ক্যারিবীয়দের ইনিংসের শুরুতেই। টাইগার ঘূর্ণিতে দিশেহারা সফরকারী ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে আসা-যাওয়ার মিছিলই লেগে গিয়েছিল। উইকেট বৃষ্টি থেমেছে হেটমায়ার এবং ডওরিচ। প্রথমজন ৩২ এবং পরেরজন ১৭ রানে অজেয় থেকে কোনো রকম দিনটা পার করেছেন। হেটমায়ারও আউট হতে পারতেন। নাঈম হাসানের ঘূর্ণিতে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েছিলেন তিনি। যদিও রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেছেন তিনি।

এর আগে পাঁচ উইকেটে ২৫৯ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। আগের দিন ৫৫ রানে অজেয় থাকা সাকিব শতকের আভাস দিয়েও ফিরে গেছেন ৮০ রানে। তবে সাকিব না পারলেও সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩১ রানের ইনিংসটাকে এই অলরাউন্ডার রূপ দিয়েছেন শতকে। শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ আউট হয়েছেন ১৩৬ রানে।

সাকিব চলে যাওয়ার পর তাকে যোগ্য সঙ্গটাই দিয়েছেন লিটন দাশ। ওয়ানডে মেজাজে করেছেন হাফসেঞ্চুরি। ৬২ বলে ৯ চার ও এক ছক্কায় ৫৪ রান করেছেন লিটন। ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ কিছুটা সঙ্গ পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ (১৫), তাইজুল ইসলাম (২৬), নাঈম হাসানেরও (১২)। আর তাতেই ইতিহাসে পাতায় ঢুকে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। দলের ১১ জন ব্যাটসম্যানই ইনিংসে রান সংখ্যায় অন্তত দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় ১৫০ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা এ নিয়ে ১৪ বার ঘটল। দল হিসেবে বাংলাদেশ ষষ্ঠ দল হিসেবে এই কীর্তি গড়ল।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ,মেহেদী হাসান মিরাজ,মাহমুদউল্লাহ,সাকিব
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close