গাজী শাহনেওয়াজ

  ২৫ জুন, ২০১৮

গাজীপুরে রাত পোহালেই ভোট

গতকাল রাত ১২টায় প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা ভোটের। কারণ, রাত পোহালেই গাজীপুর সিটিতে ভোট। এ নির্বাচন ঘিরে নির্বাচনী এলাকায় বিরাজ করছে সাজ সাজভাব। তবে জয়-পরাজয় নিয়ে নৌকা-ধানের শীষ শিবিরে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। শ্রমিক অধ্যুষিত এই সিটিতে দলীয় সমর্থিত ভোটারদের বাইরে ভাসমান ভোটাররা অনেকটা নীরব—এ নিয়েই মূলত শঙ্কা দুই শিবিরে। ভোটের দিন পরিস্থিতি বুঝে তাদের মতামত জানাবেন ব্যালটের মাধ্যমে। তবে খুলনা সিটির মতো নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন হবে কিনা, এ নিয়ে শঙ্কা নৌকার প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের। ইতোমধ্যে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সিইসি খান মো. নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে দেখা করে গাজীপুরের এসপির প্রত্যাহার চেয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিএনপির সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নৌকার প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, শুরুতেই নির্বাচন কমিশনের নিয়ম-কানুন মেনে আমি প্রচারণা শুরু করেছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট এবং তাদের প্রার্থী আমার বাবা-মায়ের কবর জিয়ারতের ঘটনাটিকেও কমিশনের কাছে নালিশ করেছেন। প্রতিদিন ২০ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় নির্দেশনামতে নানা নালিশ করে গাজীপুরবাসীকে, আমাকে, নির্বাচন কমিশনকে ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার তার কর্মীদের হয়রানিসহ নানাভাবে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আগামীকাল সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ।

জানতে চাইলে গাজীপুর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মন্ডল বলেন, সঠিকভাবে প্রচারণা চলেছে। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণায় অংশ নেয়নি। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হবে। এজন্য কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।

নির্বাচনে প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে কমিশন সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচন নিয়ে যত অভিযোগ পাচ্ছি, তার সব ঠিক নয়। ব্যক্তিগতভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি, অভিযোগ করার জন্য অনেক প্রার্থী অভিযোগ করছেন। আশা করছি, কুমিল্লা, রংপুর ও খুলনা সিটির মতো শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হবে।

প্রচারণা : গাজীপুর সিটি নির্বাচনের প্রচারণা রোববার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। সিটি নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে এ প্রচারণা শেষ হয়।

১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য : সিটি নির্বাচনে সাড়ে ১০ হাজারের মতো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্র এবং কেন্দ্রের বাইরে এসব সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে কেন্দ্র পাহারায় থাকবে পুলিশ, আনসার ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে কয়েক হাজার সদস্য। কেন্দ্রের বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে ৩০ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ৫৯ পেট্রল এবং পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে বেশ কয়েকটি টিম।

নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ৭৬ জন : প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তাৎক্ষণিক জরিমানা ও শাস্তির পাশাপাশি সামারি ট্রায়াল করে দন্ড দেবেন এসব ম্যাজিস্ট্রেট। এর মধ্যে ৫৭ ওয়ার্ডে ৫৭ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১৯ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট এ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।

৮ হাজার ৭০৮ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা : এ নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং এবং পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ৮ হাজার ৭০৮ জন। এর মধ্যে প্রতি কেন্দ্রে একজন প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে ৪২৫ জন, প্রতিটি কক্ষে একজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দুই হাজার ৭৬১ জন এবং প্রতিটি কক্ষে দুজন পোলিং অফিসার হিসেবে পাঁচ হাজার ৫২২ জন দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটার শনাক্ত এবং ব্যালট দিয়ে ভোট কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এসব কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষক : ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ভোট কার্যক্রমের গতি-প্রকৃতি, ভোটার, প্রার্থী-কর্মী সমর্থকদের গতিবিধি এবং সর্বোপরি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনসহ সব কিছু পর্যবেক্ষণ করবেন ইসির পর্যবেক্ষকরা। ভোটে অনিয়ম দেখলে তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ, রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং প্রয়োজনে কমিশনকে ঘটনার তথ্য জানাবেন তারা।

সাধারণ ছুটি : ভোটের দিন সাধারণ ছুটি থাকবে। ছুটি ঘোষণায় কমিশন থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে কমিশন। এমনকি পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের ওই দিন ছুটি দিতে শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নির্বাচন কমিশন,খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচন,গাসিক নির্বাচন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist